সাধন মন্ডল, বাঁকুড়া:- একদিকে অতি ভারী বর্ষণ, অন্যদিকে বিভিন্ন জলাধার থেকে ছাড়া হচ্ছে জল। দুইয়ের মিলিত ফলে বর্ষার শুরুতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। সিমলাপালের কাছে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম ৯ নং রাজ্য সড়কের কজওয়ের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে শিলাবতী নদীর জল। ফলে দক্ষিণ বাঁকুড়ার রাইপুর, সারেঙ্গা, মটগোদা, ফুলকুসমা প্রভৃতি এলাকার মানুষের সাথে মূল বাঁকুড়া শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আটকে পড়া পণ্যবাহী লরির চালক ও খালাসিদের উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল থেকে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে সিমলাপাল থানার পুলিশ। কজওয়ের উপর দিয়ে পারাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে স্থানীয় বিধায়ক ফাল্গুনী সিংহরায়।
এলাকাবাসীদের আক্ষেপ স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরেও শিলাবতী নদীর উপর তৈরি হলোনা কোনো সেতু। ফলে অতিবৃষ্টি হলেই প্রতিবছর ডুবে যায় কজওয়ে। শিলাবতী নদী ঘাট পারাপার করতে চরম সমস্যায় পড়তে হয় গ্রামবাসীদের। যদিও স্থানীয় বিধায়ক ফাল্গুনী সিংহ বললেন – খুব শীঘ্রই শিলাবতী নদীর উপর ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হবে।
রাইপুরের সমষ্টি উন্নয়ন অধিকারিক উদয়নারায়ন দে বললেন, এলাকার বিভিন্ন খালগুলিতে জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। কেলে পাড়ায় জলমগ্ন হয়ে পড়া চারটি পরিবারকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পাওয়ার হাউস মোড়ের দুটি পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তাদের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় বুড়া বাঁধের পাড় কেটে জল বের করা হয়েছে। মোটগোদা থেকে হলুদ কানালি যাওয়ার রাস্তায় জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া একটি ভ্যান গাড়িতে থাকা তিনজন আরোহীকে পুলিশ তাদের আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সরকারি সাহায্য দেওয়া হয়েছে।
সারেঙ্গার বিভিন্ন খালের জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। রাস্তায় জল উঠে যাওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের সাথে সারেঙ্গার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দাঁড়কিনি গ্রামের মা ভৈরবীর মন্দিরটির অর্ধেক অংশ বন্যার জলে ডুবে যায়। বিকেলের দিকে কিছুটা উন্নতি হওয়ায় সমস্ত খাল থেকে জলস্তর নামতে শুরু করে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক রয়েছেন রাইপুর ও সারেঙ্গা থানার পুলিশ প্রশাসন। রাইপুর থানার আইসি পলাশ কুমার বারিক ও সারেঙ্গা থানার আইসি সুদীপ হাজরা বললেন, বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় আমরা সতর্ক আছি। ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন একসাথে কাজ করে চলেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির হাতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর নেই।





