সংবাদদাতা, বাঁকুড়া:– শীতকাল মানেই বাঙালির কাছে পিকনিক, কমলালেবু, বড়দিন, কেক আর খেজুর গুড়ের মিষ্টি ও পিঠে পুলি। এদিকে অগ্রহায়নের শুরু, বাংলা জুড়ে এখন শীতের আগমন বার্তা। সকাল ও রাত্রে হিমেল বাতাসে অনুভূত হচ্ছে হালকা হালকা শীতের আমেজ। আর গ্রাম বাংলায় শীতের এই আগমনীর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গেছে খেজুর গুরু তৈরির প্রস্তুতি। খেজুর গাছের রস থেকে নানা রকম গুড় তৈরি হয়, যেমন পাটালি গুড়, নলেন গুড়, এবং ঝোলা গুড়। প্রতিটির স্বাদ এবং গন্ধ ভিন্ন। তবে এর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় নলেন গুড়। আবার বাঁকুড়ার জেলার স্পেশাল নলেন গুড় সকলের বড় প্রিয়।
বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন বদরা গ্রামের শিউলিরা (খেজুর রস সংগ্রহকারীরা শিউলি নামেই পরিচিত) ইতিমধ্যেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছেন। ভোরবেলা গাছে উঠে পেরে নিয়ে আসা হয় খেজুর রস ভর্তি হাড়ি। সেই খেজুর রসকে একটি ছাঁকনির মাধ্যমে ছেঁকে ঢালা হয় একটি বিরাট বড় পাত্রে। এবার সেই রস হাঁড়িতে জ্বাল দিয়ে তৈরি হয় গুড়। গ্রাম বাংলার ভোরগুলি এই সময় রস জ্বালের মিষ্টি গন্ধে মেতে ওঠে।
নদীয় থেকে জিলমত শেখরা বদরা গ্রামে এসেছেন নলেনগুড় তৈরি করতে। আপাতত এখানেই অস্থায়ী আস্তানা গড়ে রয়েছেন। আগামী প্রায় চার ধরে এই অস্থায়ী আস্তানা থেকেই গুড় তৈরি করবেন ওঁরা। প্রায় ২৪ ঘণ্টাই কেটে যায় গুড় তৈরি করতে। গাছের দেখভাল করা, রাত্রে গাছে উঠে হাঁড়ি বেঁধে আসা। হাঁড়ির ভিতরে বাদুড় কিংবা অন্যান্য প্রাণী ঢুকে পড়ছে কিনা তা নজর রাখা। আবার সূর্য ওঠার আগে গাছ থেকে রসের হাড়ি নামিয়ে আনা। এরপর দিনভর রস জ্বাল দেওয়া। তারউপর শহর থেকে এসেছে বড় অর্ডার। তাই দিন রাত এক করে গুড় তৈরির কাজ চলছে বদরা গ্রামে।