সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– মূলত অ্য়ামাজনের জঙ্গলে দেখা মেলে মাংসাশী উদ্ভিদ। তবে ভারত ও তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতেও সূর্যশিশিরের মতো কিছু মাংসাশী বা পতঙ্গভুক উদ্ভিদের দেখা মিললেও বর্তমানে এরা প্রায় বিলুপ্তপ্রায়। এবার বাঁকুড়ার সোনামুখীর জঙ্গলে দেখা মিললো পতঙ্গভুক সূর্যশিশিরের। যার ইংরেজি নাম ‘সান ডিউ’।
উদ্ভিদ সাধারণত সূর্যালোক থেকে নিজেরাই খাবার তৈরি করে। খুব কম প্রজাতির উদ্ভদ আছে যারা নিজেরা খাদ্য তৈরি করতে পারেনা। সূর্যশিশির তার মধ্যে অন্যতম। এই পতঙ্গভুক উদ্ভিদ মূলত ল্যাটিন অ্যামেরিকার ঘন অ্যামাজনের জঙ্গলে জন্মায়, যেখানে সূর্যালোক প্রবেশ করেনা। তাই বেঁচে থাকার জন্য পতঙ্গভুক জাতীয় উদ্ভিদ পোকামাকড়, কীট, পতঙ্গ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
এসব উদ্ভিদ, প্রাণীদের বিভিন্ন পদ্ধতিতে আকর্ষণ করে। যেহেতু এরা প্রাণীর মতো নড়াচড়া করতে পারেনা, তাই শিকারের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। পোকামাকড় এবং অন্য প্রাণীদের আকর্ষণ করতে কোনো কোনো মাংসাশী উদ্ভিদ বাতাসে একধরনের গন্ধ ছড়ায় যা মাছি, মৌমাছি কিংবা পিঁপড়ার মতো পোকামাকড়কে আকর্ষণ করে। আবার কোনো কোনো উদ্ভিদ মাছি কিংবা অন্য পোকামাকড়কে আকৃষ্ট করতে একধরনের পঁচা গন্ধ ছড়ায়। অনেক মাংসাশী উদ্ভিদের দেহে উজ্জ্বল রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়, যা পোকামাকড়কে আকৃষ্ট করার টোপ হিসেবে কাজ করে। কোনো কোনো উদ্ভিদের পাতার চারদিকে ছোট্ট মুক্তোদানার মতো চকচকে কিছু জিনিসের আবরণে ঢাকা থাকে। সেগুলির উজ্জ্বল রঙ এবং সুমিষ্ট গন্ধে পোকামাকড়কে প্রলুব্ধ হয়। সূর্যশিশিরের পাতায় থাকে আঠালো ফাঁদ। যাতে পোকা মাকড় আটকে যায়। এরপর ওই শিকার খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে উদ্ভিদ।
জানা গেছে দিন কয়েক আগে সোনামুখী রেঞ্জের বড় নারায়ণপুর মৌজার গভীর জঙ্গলে এই উদ্ভিদের সন্ধান মেলে। জঙ্গলে যাওয়া মানুষ জন প্রথম এই বিষয়টি দেখার পরই খবর দেয় স্থানীয় বনদপ্তরে। পরে বনাধিকারিকরা ওই জায়গায় পৌঁছে এই উদ্ভিদটিকে সনাক্ত করেন ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করেন।