শুভ্রাচল চৌধুরী, বাঁকুড়া:– পর্যটন স্বর্গ মুকুটমণিপুরে থামলো বাঘের গর্জন। টানা একুশ দিন পাহাড় জঙ্গলে লুকোচুরি খেলার পর ঘুমোলো জিনাত। রবিবারের বিকেলে, বাঁকুড়ার রানিবাঁধ রেঞ্জের গোঁসাইডিহির জঙ্গলে। তিন বছরের বাঘিনী জিনাত এই তিন সপ্তাহে নাকানিচোবানি খাইয়েছে ওড়িশা, বাংলা, ঝাড়খণ্ডের বন দপ্তরের প্রায় ১৪০ কর্মী, আধিকারিক আর ঘুমপাড়ানি এক্সপার্ট শুট্যার দের।
ঠাক করে একটা আওয়াজ! ঝোপের মধ্যে দিয়ে কি যেন একটা পালিয়ে গেল। আবারও চোখে ধুলো দিল বুদ্ধিমতী জিনাত? লক্ষ্যভেদ নাকি লক্ষ্যভ্রষ্ট ! এই ঘটনাটা ঘটার ঠিক ৩০ মিনিট পর শোনা গেল সুখবর। একটা গুলিতেই ঘুম পাড়িয়ে দিল বছর তিনের বাঘিনী জিনাতকে। বাঁকুড়ায় ধরা গেল বুদ্ধিমতি জিনাত। ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বনপালদের নাকে দড়ি পরিয়ে ঘুরিয়েছে এই বাঘিনী। অবশেষে বাঁকুড়ায় রবিবার দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ জিনাতকে ট্রাণকুলাইজ করা হয়।
বাঁকুড়ার মুখ্য বনপাল এস কুলানডাইভেল বললেন, “ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট মনে রাখবে জিনাতকে। গুলি করার ঠিক ৩০ মিনিট পর বনদপ্তর সূত্রে খবর এল যে বাঘিনী জিনাতকে খাঁচায় ঢোকানো সম্ভব হয়েছে। উড়িষ্যা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া বনদপ্তরের যৌথ প্রচেষ্টায় রবিবার বিকেলেই জিনাত নাটকের শেষ অঙ্ক দেখল বাঁকুড়া তথা বাংলার মানুষ।”
একটি গুজব শোনা যাচ্ছিল যে বাঘটি অন্তসত্তা। মুখ্য বনপাল এস কুলানডাইভাল জানান, “এটি সম্পূর্ণ একটি গুজব। জিনাত একটি সুস্থ বাঘিনী। অন্তঃসত্ত্বা নয়।” এছাড়াও জিনাতের বুদ্ধিমত্তাকে প্রশংসা জানিয়েছেন তিনি। বাঘিনীর এনার্জি এবং তিন জেলা ঘুরে আট দিন পর ধরা দেওয়ার এই কাহিনী মনে রাখবেন বলে জানিয়েছে বন দপ্তর। জিনাতকে ধরে এখন বিষ্ণুপুরে মেডিকেল টেস্ট করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য বনপাল। এখনই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না, সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টে।