সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- জিনতের পর ফের বাঘের আতঙ্ক বাঁকুড়ায়। শুক্রবার বাঘের আতঙ্ক ছড়ায় দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ ব্লকের বাগডুবি গ্রামে। এদিন সকালে গ্রামের রাস্তায় একাধিক বড় কোনো জন্তু পায়ের ছাপ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। গ্রামের যাতায়াতের কাঁচা রাস্তা জুড়ে রয়েছে ওই ছাপগুলি এবং সেগুলি জঙ্গলের দিকে চলে গিয়েছে। ছাপ গুলি দেখে গ্রামবাসীদের ধারণা সেগুলি সম্ভবত বাঘের পায়ের ছাপ। কারণ এত বড় জন্তুর পায়ের ছাপ এলাকায় আগে কোনদিন দেখা যায়নি বলে জানান তাঁরা। পায়ের ছাপ গুলি দেখে
আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা গৃহপালিত পশু বাড়ির গোয়ালে বেঁধে রাখছেন। নিজেরাও বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।
অন্যদিকে খবর পেয়ে বনদপ্তর ওই পায়ের ছাপ পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। আপাতত সেগুলি ডালপালা দিয়ে যত্ন করে ঢেকে রাখা হচ্ছে। নজরদারি বাড়াতে বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগে নতুন করে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। বনদপ্তরের অনুমান কয়েক দিন আগে যে বাঘটি এ রাজ্যের ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ার জঙ্গল ঘুরে ঝাড়খণ্ডে ফিরে গিয়েছিল, সেই বাঘটিই আবার ফিরে এসেছে। যদিও এ ব্যাপারে বন দফতরের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
প্রসঙ্গত গত বছরের শেষ দিকে ওড়িশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে ঝা়ড়খণ্ড হয়ে এরাজ্যে ঢুকে পড়েছিল বাঘিনি জিনাত। ঝাড়গ্রামের জঙ্গল হয়ে পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড় ঘুরে অবশেষে যে পৌঁছয় বাঁকুড়ার রানিবাঁধের গোঁসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে। টানা দশ দিন চেষ্টার পর সেখান থেকেই বনকর্মীদের হাতে ধরা পড়ে জিনাত। তাকে ধরতে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয়েছিল বন দফতরকে।
এদিকে জিনত ফিরে যাওয়ার পর নতুন বছরের শুরুতে আরও একটি বাঘ ঢুকে পড়েছিল ঝাড়গ্রামে। জিনতের মতোই সেখান থেকে পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ে আস্তানা গাড়ে সে। তাকে ধরার চেষ্টা করেও বিফল হয় বন দফতর। যদিও শেষমেষ সে নিজেই ঝাড়খণ্ডে ফিরে গিয়ে ঘাটশিলার জঙ্গলরে আশ্রয় নেয় বলে বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছিল।
এই বাঘটিকে বিশেষজ্ঞদের অনেকই জিনাতের প্রেমিক বলে দাবি করেছেন। কারণ জিনত যে পথ ধরে ঘুবে বেরিয়েছে সেই এলাকাগুলিতেই বিচরণ করছে এই বাঘটি। তাই জিনতের খোঁজেই তার প্রেমিক বার বার এরাজ্যের জঙ্গলে ঢুকে পড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে।