সঙ্গীতা মুখার্জ্জী মণ্ডল, পূর্ব বর্ধমান-: যুবকদের মধ্যে মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা, স্বেচ্ছাসেবা, ঐক্য ও সর্বজনীনতা সম্পর্কে সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত যুব রেডক্রস শুরু থেকেই নিজের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সংস্থার প্রতি যুবকদের উৎসাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর জেলা ভিত্তিক বার্ষিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
২৪ শে সেপ্টেম্বর বর্ধমান টাউন হলে বর্ধমান জেলা রেডক্রস পতাকা দিবসে বাক্স ও ফোল্ডারের সাহায্যে অর্থ সংগ্রহের জন্য জেলার সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলিকে পুরস্কার প্রদানের বার্ষিক অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত ভাষণে বর্ধমান জেলা রেড ক্রসের সম্পাদক রাজকুমার সাহানা সংস্থার বিগত দিনের কাজকর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি সংস্থার কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুবসমাজকে আহ্বান করেন।
জুনিয়র রেডক্রসে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা সম্পর্কে জেলা রেড ক্রসের চেয়ারম্যান ডা. এস কে দাস মনোজ্ঞ বক্তব্য পেশ করেন।
এর আগে অনুষ্ঠানে শুরুতে ভারতীয় রেডক্রসের পূর্ব বর্ধমান জেলা চেয়ারম্যান ডা. দাস বর্ধমান জেলা জুনিয়র রেডক্রসের নবনির্বাচিত সম্পাদক বিনায়ক ব্যানার্জ্জীর সঙ্গে সকলের পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাকে সভা পরিচালনা করার দায়িত্ব দেন।
জেলার প্রতিবেদন পেশ করতে গিয়ে বিনায়ক বাবু জানান, ২০২৩_২৪ সালে অবিভক্ত বর্ধমানের ১৯২টি বিদ্যালয়ে মোট ২২ হাজার ফোল্ডার ও ১৪০টি বাক্স বিতরণ করা হয় এবং প্রায় ৯ লক্ষ টাকা সংগৃহীত হয়। কিছু ফোল্ডার ও বাক্স এখনো জমা পড়েনি। সেগুলি জমা পড়লে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ বাড়বে। ফোল্ডার ও বাক্সের মাধ্যমে যে তিনটি বিদ্যালয় সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে তাদের বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হয়। বিদ্যালয়গুলি হলো যথাক্রমে বর্ধমান মডেল স্কুল, স্বামী বিবেকানন্দ একাডেমী এন্ড এডুকেশন ও বর্ধমান সি এম এস হাই স্কুল এবং কালনা কাঁকসা হাই স্কুল মেমারি ভি এম ইনস্টিটিউশন ইউনিট-২ ও গুসকরা পিপি ইনস্টিটিউশন। শহরাঞ্চলের স্বামী বিবেকানন্দ একাডেমী এন্ড এডুকেশনাল এক্সিলেন্সের শ্রুতি চৌধুরী ও গ্রামাঞ্চলের ভাতার এমপি হাইস্কুলের অগ্নিভু রায় ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ করে বিশেষভাবে পুরস্কৃত হয়। অনুষ্ঠানের শেষে বিনায়ক বাবু উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান জেলা রেডক্রসের চেয়ারম্যান ডা. এস কে দাস, সম্পাদক রাজকুমার সাহানা, কোষাধ্যক্ষ শান্তি বন্দ্যোপাধ্যায়, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তথা রেড ক্রসের ভুতপূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক কমল কুমার ঘোষ সহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি।
বিনায়ক বাবু বলেন, রেডক্রস হলো মানবতাকে বাঁচিয়ে রাখা, মানবতার প্রতি আস্থা রাখা একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এটি মানুষের মধ্যে শান্তি, ভালোবাসা ও সহাবস্থানের বিকাশ ঘটায়। জুনিয়র রেডক্রস মূলত ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী বিদ্যালয়গামী শিশুদের মনে মূল্যবোধ, নীতিবোধ ও মৌলিক নীতিগুলিকে উদ্বুদ্ধ করে। এর লক্ষ্য হলো একটি ভারসাম্যপূর্ণ, সুশৃংখল, সেবামূলক নিবেদিত ও আন্তরিক দায়িত্বশীল নাগরিক তৈরির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধির প্রকাশ ঘটানো, অন্যের সেবা করতে শেখানো ইত্যাদি।