জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউসগ্রামঃ- কৃষিপ্রধান দেশ হলেও এখনো আমাদের দেশে গড়ে ওঠেনি কোনো নির্দিষ্ট কৃষিনীতি। নতুন শতাব্দীর প্রায় এক চতুর্থাংশ শেষ হতে চলল, কিন্তু চাষের জন্য এখনো চাষীদের বৃষ্টির জলের উপর নির্ভর করতে হয়। মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের জন্য ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যাপারে চাষীদের কোনো নিশ্চয়তা নাই। এবার স্হানীয়স্তরে সেই সমস্যা দূর করতে এগিয়ে এলো আউসগ্রামের মহিলা চাষীদের একাংশ।
গত ১৮ ই জানুয়ারি আউসগ্রাম ১নং ব্লক কৃষি দফতরের উদ্যোগে এবং গ্রান্ট থ্রনটন ভারত নামে একটি সংস্থার সক্রিয় সহযোগিতায় এলাকার পাঁচশো জন মহিলা চাষী জোট বেঁধে ‘আউসগ্রাম বিজয়ীনি ফার্মার প্রোডিউসার কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলেন। উদ্দেশ্য এলাকার চাষীদের স্বার্থ রক্ষা করা।
প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে ও ফিতে কেটে সংস্হার শুভ উদ্বোধন করেন স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রজেক্ট ডাইরেক্টর অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, আউশগ্রাম ১ নং সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অরিন্দম মুখোপাধ্যায় ও উপ-কৃষি অধিকর্তা দেবতনু মাইতি, গ্রান্ট থ্রনটনের চেয়ারপার্সন মনোজ খার্ব, পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক রাপতি পান ও দেবারতি সহ অন্যান্য ব্যাক্তিরা। ঐদিনই আউসগ্রাম বাজার এলাকায় ওই সংস্থার একটা কার্যালয় খোলা হয়েছে। জানা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই সংস্থার আনুষ্ঠানিক পথ চলা শুরু হবে।
অরিন্দম বন্দোপাধ্যায় বললেন- প্রায় প্রতিবছর বিভিন্ন কারণে প্রান্তিক চাষীরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পায়না, অথচ চাষের খরচ বেড়েই চলেছে। আমাদের লক্ষ্য চাষীরা যাতে কম খরচে চাষ করতে পারে ও বেশি দামে ফসল বিক্রি করতে পারে সেটা নিশ্চিত করা।
দেবতনু বাবু বললেন- জেলায় এই প্রথম মহিলা পরিচালিত কৃষি উৎপাদক কোম্পানি গড়ে উঠল। পরবর্তীকালে এলাকার অন্যান্য চাষীদেরও এব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে চেষ্টা করা হবে।
সংস্থার চেয়ারম্যান সাহানারা মল্লিক জানান- কৃষি ব্যবসা বাড়াতে কীটনাশক সার, গবাদি পশুর খাবার, মাছের খাবার বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থা। এমনকি একসাথে বেশি জমিতে কীটনাশক ছড়ানোর জন্য ড্রোন ভাড়া দেওয়ার ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে প্রাথমিক কথাবার্তা বলা হয়েছে। পাশাপাশি গোবিন্দভোগ ধান, ডাল কিনে তা ভেঙে প্যাকেটজাত করে বড় সংস্থায় সরাসরি বিক্রি করা সহ নানা ব্যবসা করার পরিকল্পনা রয়েছে। কৃষি ভিত্তিক বড় উদ্যোগের জন্য ঋণের সুযোগও আছে।