জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,পূর্ব বর্ধমানঃ- ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের আগে একদল প্রথম সারির নেতার দলত্যাগ, দুর্নীতির অভিযোগ প্রভৃতি নানা দিক দিয়ে কার্যত কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা যখন দলকে চেপে ধরেছে ঠিক সেই সময় মমতা ব্যানার্জ্জীর মস্তিষ্ক প্রসূত ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দেয়। পরপর পাঁচটি ‘দুয়ারে সরকার’ -এর সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে গত ১ লা এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ষষ্ঠ দফার কর্মসূচি। দুটি পর্যায়ে (১-১০ এপ্রিল ও ১১-২০ এপ্রিল) আয়োজিত এই কর্মসূচি প্রথমবারের জন্য বুথ-স্তরে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্যায়ে ৩৩টি সরকারি প্রকল্পের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে। পরে আবেদনগুলি পরীক্ষা করা হবে এবং পরবর্তী ১০ দিন ধরে যোগ্যদের পরিষেবা প্রদান করা হবে। এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায় শেষ হয় ১০ ই এপ্রিল।
পূর্ববর্তী শিবিরের মত এবারও বিভিন্ন শিবিরে ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য। গত দশ দিন ধরে পরিষেবা গ্রহণের উদ্দেশ্যে পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন ব্লকে আয়োজিত প্রায় ৫,০০০ টির বেশি শিবিরে ১.৫ লক্ষাধিক মানুষ আবেদন করে। জানা যাচ্ছে সময়মত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে অনেক আবেদন পরীক্ষার কাজ শুরু হয়ে গ্যাছে এবং অনেকেই বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে।
ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চাওয়া ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র অরিত্র ঘোষের শ্রমিক বাবার পক্ষে সন্তানের পড়াশুনো চালানো কঠিন ছিল। তাই তিনি বর্ধমান-২ এর একটি শিবিরে ‘মেধাশ্রী বৃত্তি’ পাওয়ার জন্য আবেদন পূরণ করেন এবং দুই দিনের মধ্যে মেধাশ্রী বৃত্তি লাভ করে।
একইভাবে ছাগল প্রতিপালনের জন্য কাটোয়ার দাঁইহাটের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ ধর দুয়ারে সরকার শিবিরে ঋণের জন্য আবেদন করেন। আবেদন পত্র পরীক্ষার পর পশুপালন বিভাগের কর্মকর্তারা তার বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং তাকে ঋণ দেওয়া হয়।
প্রসেনজিৎ বাবুর বক্তব্য – ভাবতে পারিনি আবেদন করার পর অল্পসময়ের মধ্যে আমার ঋণ মঞ্জুর হবে। এবার পরিবারের মুখে ভালভাবেই দু’বেলা খাবার তুলে দিতে পারব। সহযোগিতা করার জন্য উনি সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বললেন- প্রত্যেক শিবিরে হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত আধিকারিকরা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এবং কন্যাশ্রী শিক্ষার্থীরা আবেদনকারীদের সহায়তা করছেন। তিনি আরও বলেন – কোনো আবেদনপত্রে অসম্পূর্ণ তথ্য থাকলে সেগুলো ফোন করে ঠিক করে নেওয়া হবে । আমাদের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুযোগ থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় ।