সংবাদদাতা, বর্ধমান:– বর্ধমানে অভিনব প্রতারণা চক্রের হদিশ। নিখোঁজ হওয়া স্ত্রী ও ৫ বছরের ছেলেকে খুঁজে দওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ধৃত ব্যক্তি। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে একটি বড়সড় প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত ধৃত ব্য়ক্তি। যার মূল পাণ্ডা মেমারির বাসিন্দা । চক্রটি আরও অনেককে ফাঁদে ফেলে এ ধরণের প্রতারণা করেছে বলে ধৃত ব্যক্তি জেরায় স্বীকার করেছে, এমনটাই দাবি পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর রায়না থানার শ্যামসুন্দরের বাসিন্দা সুমন্ত সাঁতরার স্ত্রী মমতা সাঁতরা তাদের ৫ বছরের ছেলে সৌম্যদীপ সাঁতরাকে নিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর স্ত্রী ও ছেলেকে হন্যে হয়ে জায়গায় জায়গায় খুঁজতে শুরু করেন সুমন্তবাবু। এরই মধ্যে গত ২২ অক্টোবর হুগলির আরামবাগ শহরে তার সঙ্গে জাকির আলি খান ওরফে বসির নামে এক ব্যক্তির পরিচিয় হয়। ওই ব্যক্তি পুলিশে তার পরিচিতি রয়েছে দাবি করে সুমন্ত সাঁতরার স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দেয় এবং তার জন্য ৫০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানায়। সুমন্তবাবুর দাবি তিনি সঙ্গে সঙ্গে পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে ওই টাকা দেন। এরপর জেলা শাসকের অফিস, এসপি অফিস প্রভৃতি জায়গায় কাগজ করতে হবে বলে জাকির তার কাছ থেকে কয়েক দফায় আরও ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নেয় বলে দাবি সুমন্তবাবুর। এসবের মধ্যেই গত ২০ ডিসেম্বর স্ত্রী ও ছেলেকে খুঁজে পান তিনি। কিন্তু স্ত্রী ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার কথা তিনি আর জাকিরকে জানাননি।
এদিকে টাকা আদায়ের ফের ফন্দি আঁটে জাকির। গত শুক্রবার সে ফের সুমন্তবাবুকে ফোন করে জানায় টোকেনের জন্য ১ হাজার ৩০০ টাকা দিতে হবে। সেই টোকেন দেখিয়ে শক্তিগড় থানার বামবটতলা এলাকার একটি হোম থেকে ছেলেকে ফেরত পাবেন তিনি। এরপরই সুমন্তবাবু বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন এবং বিষয়টি রায়না থানায় জানান। অভিযোগ পেয়ে রায়নার শ্যামসুন্দর বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত জাকির আলি খান ওরফে বসিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে শনিবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হলে ধৃতের ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ভুয়ো পরিচয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ধৃতের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে চক্রের মূল পাণ্ডার খোঁজ।