সংবাদদাতা, বর্ধমান:– জমি বিবাদে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করেননি রায়না থানার ওসি। উল্টে মামলাকারীকে জমিতে চাষ দিতে বাধা দিচ্ছেন তিনি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় এ ব্যাপারে ওসির ব্যাখ্যা তলব করেছে আদালত। ওসিকে সশরীরে হাজির হয়ে – কেন তিনি আদালতের নির্দেশ মানেন নি তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। তার নির্দেশে বিচারক জানিয়েছেন, সম্ভবত আদালতের আদেশ বুঝতে পারেন নি ওসি। বর্ধমানের দ্বিতীয় অতিরিক্ত সিনিয়র ডিভিশন এই নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাকারীর আইনজীবী হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আদালত বিতির্কত জমির চরিত্র বদল করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, মামলাকারী যাতে জমিতে চাষাবাদ করতে পারেন তার নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু, রায়না থানার ওসি মামলাকারীকে জমিতে চাষ করতে বাধা দিচ্ছেন। আদালত ওসিকে রিপোর্ট পেশ করতে বললেও তা তিনি করছেন না। উল্টে, মামলাকারীকে হেনস্তা করছেন। মামলাকারী অভিযোগ জানাতে গেলে ওসি তা নিচ্ছেন না। সে কারণে ওসিকে আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। বিষয়টি জেলার পুলিস সুপারকেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়না থানার পলাশনের পীযূষকান্তি ঘোষের পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে। তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁর ভাই-বোনেরা নিজেদের মধ্যে জমির ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। একটি জমি তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চাষ করছেন। কিন্তু, কিছুদিন আগে সেই জমিতে চাষ করতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। এনিয়ে তিনি এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলায় আদালতে পেশ করা রিপোের্ট ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর জানিয়েছে, পীযূষ ৩০ বছর ধরে জমিটি চাষ করছেন এবং সেটি তাঁর দখলেই রয়েছে। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা চলাকালীন তাঁকে চাষে বাধা দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে তিনি দেওয়ানি আদালতে মামলা করেন। দেওয়ানি আদালত জমির চরিত্র কোনওভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না এবং বর্তমান অবস্থা বজায় থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছে। তারপরও তাঁকে জমি চাষে বাধা দেওয়া হয়। আদালতে পুলিসের সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন মামলাকারী। আদালত পুলিসকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু, তারপরও পুলিস তাঁকে কোনও রকম সাহায্য করছে না বলে আদালতে উল্লেখ করেছেন মামলাকারী। এনিয়ে আদালত ওসির রিপোর্ট তলব করে। সেই রিপোর্টও আদালতে পেশ করেন নি ওসি।