জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, পূর্ব বর্ধমানঃ- চলাচলের পক্ষে ঠিক কতটা অনুপযুক্ত হলে সরকারি ভাবে তাকে বেহাল বলা যাবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেটা মেরামতের জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেবে – এই প্রশ্ন আজ পশ্চিম মঙ্গলকোটের চাণক অঞ্চলের রামনগর ও উজিরপুর গ্রামের বাসিন্দাদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
গণপুর থেকে রামনগর যাওয়ার জন্য প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। যেখানে সেখানে ইঁট বের হয়ে আছে। এক এক জায়গায় গর্ত দেখে মনে হবে সরকারি উদ্যোগে মাছ চাষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মেরামতের কোনো উদ্যোগ নাই। উল্টে রাস্তার ধারে জমির মালিকরা অবৈধভাবে রাস্তা কেটে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে নিচ্ছে। এরফলে রাস্তাটি ধীরে ধীরে প্রশস্ত আলে পরিণত হচ্ছে। এছাড়া রাস্তার দু’ধারে বেনা গাছের জন্য সাপের আতঙ্ক তো আছেই।
অথচ এই রাস্তা ব্যবহার করে রামনগর ও মল্লিকপুর গ্রামের ছেলেমেয়েরা গণপুর উচ্চ বিদ্যালয় যায়। দুটি গ্রামের বাসিন্দারা যায় গণপুরে অবস্হিত পঞ্চায়েত অফিসে এবং একশ দিনের কাজের টাকা তোলার জন্য যায় জালপাড়ায় পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাংকে। অন্যদিকে দূরত্ব কম হওয়ার জন্য গণপুর, পালপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা এই রাস্তা ব্যবহার করে গুসকরায় যায়।
রামনগরের বাসিন্দা ভুবন ঘোষ বললেন – সত্যিই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এলাকার জনগণের স্বার্থে দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে সবচেয়ে আগে দরকার রাস্তাটি মেপে দখলীকৃত অংশ উদ্ধার করা। একইসঙ্গে রাস্তার ধারে বেনা গাছ কাটার উদ্যোগ নিতে হবে। একই সুর শোনা গ্যালো অন্যান্যদের কণ্ঠে।
একই পরিস্থিতি দ্যাখা যায় উজিরপুর যাওয়ার রাস্তায়। গুসকরা নতুনহাট রোডের পশ্চিম দিকে উজিরপুর গ্রাম। মূল রাস্তা থেকে সংশ্লিষ্ট গ্রামে যাওয়ার জন্য দুটি রাস্তা আছে – একটি চকপরাগ ও অপরটি উজিরপুর বাসস্ট্যান্ডে নেমে। চকপরাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি খানাখন্দে ভর্তি। বৃষ্টি হলে সেগুলো বিপজ্জনক আকার ধারণ করে। তখন রাতের অন্ধকারে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে গ্রামবাসীরা।
গ্রামে যাওয়ার দ্বিতীয় রাস্তাটির অবস্থাও খুবই খারাপ। বছর আটেক আগে রাস্তায় মোরাম দেওয়া হয়। যদিও এলাকাবাসীর অভিযোগ খুবই নিম্নমানের কাজ হয়েছিল। রাস্তার সর্বত্র ইঁট বের হয়ে আছে। মনে হবে দাঁত বের করে পথিকদের সঙ্গে রসিকতা করছে। পরিস্থিতি এমন যে গ্রামে কোনো টোটো পর্যন্ত যেতে চায়না।
গ্রামের বাসিন্দা মিহির পালের বক্তব্য – রাস্তাটি মেরামতের জন্য আমরা প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী উদ্যোগ নিতে দ্যাখা যায়নি।
চাণক গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্যতম সদস্য পতিতপাবন মণ্ডল বললেন – পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল আছি। রাস্তা দুটি মেরামতের বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে।