জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, পূর্ব বর্ধমান -: বর্ধমানের রথতলা মনোহরদাস বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সেখানে থাকাকালীন তিনি দেখেছিলেন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা মহালয়ার আগে নিজেদের হাতে তৈরি বিভিন্ন রকম খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একদিনের জন্য ‘ফুড স্টল’ খুলেছে। ক্রেতা ওখানকার ছাত্রছাত্রী ও অধ্যাপকরা। একে কেন্দ্র করে সবার মধ্যে দেখা যেত প্রবল উৎসাহ।
এবার বিশ্বভারতীর অনুকরণে দুর্গাপুজোর ছুটির আগে বিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নিজ বিদ্যালয় রথতলা মনোহরদাস বিদ্যানিকেতনে প্রথমবারের জন্য সেই আমেজ নিয়ে এলেন প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বছর প্রথম অনুষ্ঠিত করল ‘আনন্দমেলা’। নিজ নিজ পছন্দের খাবারের ‘স্টল’ দেয় ছাত্রছাত্রীরা। কেউ করেছিল ঘুগনি বা ফুচকার স্টল, কেউ বা পাস্তা, সুজির হালুয়া। চা ও বিস্কুটের স্টলও ছিল। ক্রেতা বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বিক্রিও হয়েছে ভাল। খাবারগুলো বাড়ি থেকে তৈরি করে নিয়ে আসা হলেও অনীক, পিণ্টু, অপূর্ব প্রমুখদের আনন্দের সীমা ছিলনা। প্রধান শিক্ষকের কাছে তাদের দাবি শীতকালে আবার এই মেলার আয়োজন করতে হবে। প্রধান শিক্ষক হাসিমুখে সন্তান তুল্য ছাত্রদের সেই দাবি মেনে নেন।
বিনায়ক বাবু বলেন, ঠিক হয়েছে প্রতি বছর বিদ্যালয়ে ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠিত হবে। থাকবে সাবেকি বাঙালিয়ানা, আগমনী গান ও নাচ, বাঙালি সাজে নিজেকে সাজাও – এই ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মূলত এটি এমন একটি সাংস্কৃতিক ও হস্তশিল্প মেলা হবে যেখানে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা অংশগ্রহণ করবে। মেলায় থাকবে ছাত্রছাত্রীদের তৈরি হস্তশিল্প, চিত্রকলা ও দেশীয় খাবার ও ঐতিহ্যবাহী পদের আয়োজন। সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক ও কবিতা পাঠের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে। এর উদ্দেশ্য হবে সৃজনশীলতা প্রকাশ, ছাত্রদের অংকন ও শিল্পকলাকে উৎসাহ দেওয়া এবং সমবেত আনন্দ ভাগাভাগি করা, পরিবেশের সারল্য উপভোগ করা, ঐতিহ্য ও প্রকৃতির সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানো। এই উদ্দেশ্যে আশেপাশের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়গুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।





