জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, আউসগ্রাম, পূর্ব বর্ধমান-: আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি রক্তদান শিবির থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজে রাজ্য্যের পুলিশ প্রশাসনকে বারবার অগ্রণী ভূমিকা নিতে দ্যাখা যায়। এবার অন্য ভূমিকায় দ্যাখা গ্যালো আউসগ্রাম থানার ছোড়া পুলিশ ফাঁড়ির ওসি ত্রিদিব রাজকে।
ট্রাফিক পুলিশের সৌজন্যে পথ দুর্ঘটনা অনেকটা কমলেও মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। লক্ষ্য করলে দ্যাখা যায় একদল যুবক বেপরোয়া মোটরবাইক চালাতে গিয়ে বিপদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। অনেক সময় রাস্তার উপরে থাকা হাম্প বুঝতে না পারার জন্য দুর্ঘটনা ঘটে যায়। শীতকালে কুয়াশা জনিত কারণে দৃশ্যমানতা কম থাকার জন্যও দুর্ঘটনা ঘটে।
এগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য এগিয়ে এল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। তাদের পরামর্শে রাস্তায় নেমে বিভিন্ন ধরনের ‘ট্রাফিক মার্কিং’ যেমন জেব্রা ক্রসিং, উঁচু হাম্পে ট্রাফিক সিগনাল সহ নানান চিহ্ন আঁকতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীরা। কাজের তদারকি করার সঙ্গে সঙ্গে থানার ওসি ত্রিদিব রাজ নিজেও মাঝে মাঝে রঙ-তুলি হাতে নিয়ে এইসব চিহ্ন আঁকতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। স্বয়ং ওসিকে দেখে পথচলতি মানুষ থমকে দাঁড়ায়। যদিও এর আগেও জঙ্গল অধ্যুষিত আউসগ্রামে বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষার ক্ষেত্রে ত্রিদিব বাবুর অগ্রণী ভূমিকা এলাকাবাসীর প্রশংসা আদায় করে নেয়।
ত্রিদিব বাবু বললেন, এই এলাকা জঙ্গল অধ্যুষিত। রাস্তার মধ্যে অনেক বাঁকের পাশাপাশি দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য জনবহুল স্কুল বা বাজার এলাকায় বেশ কিছু হাম্প তৈরি করা হয়েছে। এগুলো গাড়ির চালকরা দূর থেকে যাতে স্পষ্ট বুঝতে পারেন তারজন্য এই চিহ্নিত করণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তার দাবি ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকদের তৎপরতার জন্য পথ দুর্ঘটনা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে। আমরা এটা শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই। তিনি আরও বলেন, এটা কোনো ব্যক্তির নয় একটা সমষ্টিগত কাজ।
ওসি সহ ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীদের এই ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বিশিষ্ট গবেষক তথা লেখক রাধামাধব মণ্ডল বললেন, দুর্ঘটনাকে শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য এবার আমাদেরও সচেতন হতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সবার মিলিত প্রচেষ্টায় হয়তো কোনো মায়ের কোল অকালে খালি হবেনা, কোনো নারীকে অকাল বৈধব্যের যন্ত্রণা ভোগ করতে হবেনা, সন্তান হারাবেনা তার পিতাকে।