সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– দীর্ঘ ১১ বছর আগে আন্তর্জাতিক জি আই স্বীকৃতি মিলেছিল বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী বালুচরি শাড়ি শিল্পে। এত দিন পর এবার বালুচরি শিল্পীরাও পেলেন জি আই স্বীকৃতি। শুক্রবার বিষ্ণুপুরের মোট ১৭ জন বালুচরি শিল্পীর হাতে তুলে দেওয়া হল আন্তর্জাতিক গ্লোবাল ইন্ডিকেশান তকমা । এরফলে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন বালুচরি শিল্পীরা
একসময় মুর্শিদাবাদ জেলার বালুচর গ্রামে ছিল বিখ্যাত তাঁত শিল্প । নবাব আমলে অন্দরমহলের বেগমদের ব্যবহারের জমকালো শাড়ি তৈরি জন্য বালুচরের তাঁত শিল্পীদের কদরও কম ছিল না । সময়ের সাথে সাথে বালুচর গ্রামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বহুমূল্য সেই শাড়ি পরিচিতি পায় বালুচরি হিসাবে । মুর্শিদাবাদে নবাবি শাসন মুছে যাওয়ার বালুচরি শিল্পও লোপ পায়। বিগত শতকের মাঝামাঝি কোনোভাবে বালুচরি শাড়ি তৈরির প্রক্রিয়া চলে আসে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে । তারপর বিষ্ণুপুরের তাঁতে নিরন্তর গবেষণা ও তাঁত শিল্পীদের নিরলস শ্রমে বালুচরি শাড়ি ফিরে পায় তাঁর ঐতিহ্য়। রাজ্য ও দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিষ্ণুপুরের বালুচরির সুমান ও বাজার ছড়িয়ে পড়ে বিদেশের মাটিতেও ।
এদিকে বিষ্ণুপুরের বালুচরির শিল্পের যত প্রচার প্রসার ঘটতে থাকে ততই ওই শিল্পের জি আই স্বিকৃতীর দাবী প্রবল হতে থাকে বিগত শতকের শেষ দিক থেকে । তাঁত শিল্পীদের লাগাতার লড়াই ও প্রশাসনের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালে বিষ্ণুপুরের বালুচরি শিল্প আন্তর্জাতিক তকমা জি আই লাভ করে । কিন্তু শিল্পীরা জি আই শংসাপত্র না পাওয়ায় এতদিন নিজেদের তাঁতে উৎপাদিত শাড়িতে জি আই ট্যাগ ব্যবহার করতে পারতেন না বিষ্ণুপুরের কোনো বালুচরি শিল্পী । শিল্পের জি আই লাভের দীর্ঘ এগারো বছর পর ২০২২ এর শেষে এসে অবশেষে মিললো সেই স্বীকৃতি ।
বিষ্ণুপুরের ১৭ জন বালুচরি শিল্পীর হাতে তুলে দেওয়া হল জি আই শংসাপত্র। এই জি আই স্বীকৃতি পাওয়ায় এবার বালুচরি শিল্পে নতুন জোয়ার আসবে, এমন আশাতেই বুধ বাঁধছেন শিল্পীরা । প্রাথমিকভাবে ১৭ জন শিল্পীকে জি আই শংসাপত্র দেওয়া হলেও আগামীদিনে বিষ্ণুপুরে প্রথাগত ভাবে বালুচরি শাড়ি তৈরির সাথে যুক্ত সমস্ত বালুচরি শিল্পীকেই এই শংসাপত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা ।