সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– শারদীয় দুর্গোৎসবের এখনো দিন ১৫ বাকি। এখন দুর্গোৎসব ঘিরে প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা চোখে পড়ার মত। তবে সেই ব্যস্ততার মধ্যেই রবিবারই মল্লভূম বিষ্ণুপুরের রাজ পরিবারের ১০২৭ বছরের প্রাচীন কুলদেবী মা মৃন্ময়ীর আগমন হয়ে গেল। তোপধ্বনীর আওয়াজে স্নান সেরে দেবীর মন্দিরে উঠে আসার বার্তা ছড়িয়ে পড়ল দূর দূরান্তে। রাজ পরিবারের প্রচীন রীতি অনুযায়ী জীতাষ্টমীর ঠিক পরের দিন অর্থাৎ নবমী তিথি থেকে শুরু হয় দেবী মৃন্ময়ী বন্দনা। রাজ্যের বেশিরভাগ স্থানে কালিকা পুরাণ মতে দুর্গা পুজা হলেও প্রচীন কাল থেকেই বিষ্ণুপুরের রাজপরিবারের মৃন্ময়ী পুজো হয় বলিনারায়ণী পুঁথির নিয়ম মেনে।
মল্ল রাজ পরিবার সূত্রে জানা যায় তাদের পূর্বপুরুষ জগৎমল্ল বেরিয়েছিলেন শিকারের উদ্দেশ্যে। পথ হারিয়ে একসময় ক্লান্ত হয়ে আশ্রয় নেন বটবৃক্ষের নিচে। কথিত আছে সেই বট বৃক্ষের নিচেই মল্ল রাজ জগৎমল্লের সঙ্গে ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা। শোনা যায় তিনি দৈববাণী শুনতে পান বটগাছের তলায় মা মৃন্ময়ীর মন্দির স্থাপন করার। বট গাছের নিচে তৈরি হয় সুবিশাল মন্দির। ঘন জঙ্গল কেটে মল্ল রাজধানী সরিয়ে আনা হয় বিষ্ণুপুরে। শোনা যায় একসময় নর বলি হত পুজোয়। তবে পরবর্তীকালে মল্ল রাজ বৈষ্ণব ধর্মের ছত্র ছায়ায় আসার পর বন্ধ হয়ে যায় নরবলি। পরিবর্তে তোপ দেগে ঘোষণা করা হয় পুজোর সমস্ত নির্ঘণ্ট। তাই আজও স্থানীয় মূর্ছা পাহাড় থেকে ছোট তোপ দেগে জানান দেওয়া হয় মায়ের আগমন। আর এই তোপধ্বনির দ্বারা মায়ের আগমনী বার্তায় আজও আনন্দে মেতে ওঠেন বিষ্ণুপুরবাসী।