সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– এবার বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী কালিন্দী বাঁধ ভরাটের অভিযোগ উঠল। এদিকে ঐতিহ্যবাহী দিঘি ভরাটের ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর । বিজেপির দাবী এর পিছনে মদত রয়েছে তৃণমূলের। অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের।
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর একসময় ছিল মল্ল রাজাদের রাজধানী। আর এই মল্ল রাজাদের আমলে খনন করা হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী কালিন্দী বাঁধ। শুধু কালিন্দীই বাঁধই নয় মল্ল গড় বিষ্ণুপুরে জল সঙ্কট মেটাতে ও সেচের উদ্যেশ্যে মল্ল রাজারা বিষ্ণুপুরের বিভিন্ন প্রান্তে লাল বাঁধ, যমুনা বাঁধ, কালিন্দী বাঁধ সহ মোট সাতটি দিঘি খনন করেন। দীর্ঘদিন ধরে সেগুলি সংস্কারের অভাবে বর্তমানে অধিকাংশই বাঁধই অস্তিত্বের সঙ্কটে রয়েছে। এরই মধ্যে কালিন্দী বাঁধের একাংশ মাটি দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ উঠল ওই দিঘির মাছ চাষীদের বিরুদ্ধেই। স্থানীয়দের অভিযোগ বেআইনী ভাবে কালিন্দী বাঁধের একাংশ শালের বল্লা ও ড্রাম দিয়ে ঘিরে ট্রাক্টরের পর ট্রাক্টর মাটি ফেলে ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। এরফলে ঐতিহ্যবাহী ওই দিঘির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত মাছ চাষী সজল মুখোপাধ্যায় কালিন্দী বাঁধের একাংশ ভরাটের অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর দাবী মাছ চাষের সুবিধার জন্য এবং পরবর্তীতে বোটিং ও ভাসমান হোটেল নির্মাণের উদ্যেশ্যেই ওই অংশ ভরাট করা হচ্ছিল।
সম্প্রতি ওই দিঘি ভরাটের লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে ভূমি সংস্কার দফতরে । অভিযোগ জমা পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে ভূমি সংস্কার দফতর। অভিযোগ পেয়েই দিঘি ভরাট বন্ধের নোটিশ জারি করার পাশাপাশি শনিবার ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করলেন দফতরের আধিকারিকরা। এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা জানান অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভরাটের প্রমাণ মিললে পদক্ষেপ করা হবে।
এদিকে শহরের ঐতিহ্যবাহী দিঘি ভরাটের অভিযোগ সামনে আসতেই বিষ্ণুপুর শহর জুড়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবী তৃণমূল নেতাদের মদতেই এভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। এর প্রতিবাদে শহর জুড়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে তৃণমূলের দাবী এই ঘটনার সাথে তৃণমূল কোনোভাবে যুক্ত নয়। এই অন্যায়কে কোনোভাবে মেনে নেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই ভূমি সংস্কার দফতর বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে ও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।