নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ হাতি, ফনীর পর এবার নতুন সংযোজন ট্যারেন্টুলা। আপাতত এই তিনের দাপটে নাজেহাল জঙ্গলমহল বাঁকুড়া। এমনিতেই বাঁকুড়াবাসীর চিরকালীন সমস্যা দলমার তান্ডব। সে পার্শবর্তী দামোদর নদী পেরিয়েই হোক কিংবা রেসিডেন্সিয়াল হাতির তাণ্ডবই হোক, প্রায় প্রত্যেক দিনই বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন গ্রামে দলমার তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন সময় দলমার হানায় যেমন চাসবাসের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, ঘরবাড়ি ভাঙছে তেমনি হাতির হানায় গ্রামবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এপ্রিল মাসেই বাঁকুড়া জেলায় হাতির হানায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই গ্রামবাসী। এই বছরেই হাতির হানায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন। প্রত্যেকদিনই নিয়ম করে খাবারের সন্ধানে জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ছে হাতির দল। ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সাধারণতই বনদফতরের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছেন বাঁকুড়াবাসী। তাদের অভিযোগ, বনদফতরের গাফিলতির জেরেই বারবার হাতির পাল লোকালয়ে চলে আসছে অথচ বনদফতর সম্পূর্ণ ব্যর্থ। পাশপাশি তাদের আরও অভিযোগ, হাতির হানায় কোনও মানুষের মৃত্যু হলে বনদফতর এককালীন তার পরিবারকে সামান্য কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়েই দায় সাড়ছে, কিন্তু কোনও পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তির মৃত্যু হলে সারাজীবন তার ফল ভুগছে সেই পরিবার। সেই হাতির হানা থেকে যখন বাঁকুড়াবাসীর নিস্তার নেই, তারমধ্যেই এবার নতুন করে যুক্ত হল ট্যারেন্টুলা আতঙ্ক। হ্যাঁ, ফের বাঁকুড়া জেলায় বিষাক্ত ট্যারেন্টুলা মাকড়সার আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ট্যারেন্টুলা মাকড়সার কামড়ে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে সারেঙ্গা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি পশ্চিম মেদিনীপুরের কদমবান্দির বাসিন্দা ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র কার্তিক আহির। জানা গেছে ১১ বছরের ওই কিশোর রবিবার সকালে স্থানীয় একটি মন্দিরের পিলারে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আচমকায় সেইসময় তার হাতে কামড়ে দেয় ট্যারেন্টুলা মাকড়সাটি। দ্রুত তাকে সারেঙ্গা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বাঁকুড়া জেলায় ট্যারেন্টুলার আগমন এই প্রথম নয় এর আগেও জেলায়ব একাধিকবার ট্যারেন্টুলা উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে, এর আগেও ট্যারেন্টুলা নামক এই বিষাক্ত মাকড়সার কামড়ে জখমও হয়েছেন কয়েকজন। স্বভাবতই ফের সেই মাকড়সা উদ্ধারের খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলায়। তবে জীব বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ট্যারেন্টুলা জাতীয় এই মাকড়সা সাধারণত ভারতীয় জলবায়ুর প্রজাতি নয়, এই মাকড়সা সাধারণত আফ্রিকার জঙ্গল ও তার লাগোয়া পার্শবর্তী অঞ্চলে বেড়ে ওঠে। কিন্তু গত কয়েক বছরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ট্যারেন্টুলার দেখা মিলেছে একাধিকবার। একদিকে ফনী নামক ঘূর্নিঝড়ে বেসামাল বাঁকুড়া, তারওপরে হাতির আতঙ্ক তো রয়েছেই, এবার তার সাথে যুক্ত হল ট্যারেন্টুলা।