সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী) ঃ- ২৫ মে,বৃহস্পতিবার অরণ্য ষষ্ঠী। এই অরণ্য ষষ্ঠীকে জামাইষষ্ঠীও বলা হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, মেয়ে জামাইয়ের দাম্পত্য সম্পর্কের মঙ্গল কামনায় ও মেয়ের সুসন্তান লাভের আশায় শাশুড়ি ষষ্ঠী করেন। প্রতি ঘরে ঘরে এইদিন হয় জামাই আদর।
এই জামাইষষ্ঠীর ব্রত কথা রূপে একটি গল্প কথার প্রচলন আছে। যেখানে বলা হয় যে, একটি পরিবারের দুটি বউ ছিল যার মধ্যে ছোট বৌ ছিল খুব লোভী। বাড়িতে মাছ বা অন্যান্য ভালো খাবার হলেই সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিতো আর শাশুড়ির কাছে অভিযোগ করে বলতো, সব কালো বিড়ালে খেয়ে নিয়েছে। বিড়াল হল মা ষষ্ঠীর বাহন তাই বিড়াল একদিন মা ষষ্ঠীর কাছে অভিযোগ জানালে মা ষষ্ঠী রেগে গেলেন। এরপর ছোটো বৌয়ের একটি করে সন্তান হয় এবং মা ষষ্ঠী তার প্রাণ হরণ করেন। এইভাবে ছোট বৌয়ের সাতপুত্র ও এক কন্যাকে মা ষষ্ঠী নিয়ে নেন। তখন তার পরিবারের স্বামী, শাশুড়ি এবং অন্যান্য সকলে তাকে অলক্ষী বলে গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে বড় বউ পুত্র-কন্যাদের নিয়ে সুখে ঘর করতে থাকে।
এই সময় ছোট বউ মনের দুঃখে বনে চলে যায় ও একাকী কাঁদতে থাকে। তখন মা ষষ্ঠী বৃদ্ধার ছদ্মবেশে এসে তাকে কান্নার কারণ জানতে চান এবং সে তার দুঃখের কথা বলে। এইসময় মা ষষ্ঠী তার পূর্বের অন্যায় আচরণের কথা বললে সে মাফ চায় ও মা ষষ্ঠী তাকে ক্ষমা করেন। এরপর মা ষষ্ঠী তাকে বলেন যে, ভক্তি করে মা ষষ্ঠীর পুজো করলে সাত পুত্র আর এক কন্যার জীবন ফিরে পাবে। তখন ছোট বউ সংসারে ফিরে এসে ঘটা করে মা ষষ্ঠীর পুজো করে ও ক্রমে ক্রমে তার পুত্র কন্যাদের ফিরে পায়।- সেই থেকেই জামাইষষ্ঠী বা অরণ্য ষষ্ঠীর ব্রত মাহাত্ম্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।