সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- “ও.. আয় রে ছুটে আয় পুজোর গন্ধ এসেছে, ঢ্যাম্ কুড়কুড়, ঢ্যাম্ কুড়াকুড় বাদ্যি বেজেছে, গাছে শিউলি ফুটেছে…” দুর্গাপুজো মানেই কাশ ফুল, নীল আকাশে মেঘের ভেলা, শিউলি ফুল…. সব মিলিয়ে পুজো কেমন পুজো গন্ধ। আর কোনো জাতির কথা জানা নেই! তবে বাঙালি যে পুজো পুজো গন্ধ পায় তা নিয়ে কোনো মতান্তর নেই। আর এই পুজো পুজো গন্ধর সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে থাকে নতুন জামার গন্ধ, বিশেষত ছোটদের কাছে। কিন্তু এখনও গ্রামে গঞ্জে শহরে বহু খুদেদের কাছে পুজোয় নতুন জামা যেন কোন স্বপ্ন। ওদের কথা মাথায় রেখেই পুজোয় সমাজের প্রান্তিক ওইসব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আসানসোলের সমাজসেবী সংগঠন ” ইয়োর অর্গানাইজেশন”। আমেরিকার দুই প্রবাসী বাঙালির সাহায্য়ে আসানসোলের বার্নপুরের শ্যামডিহি সাঁওতাল পাড়ার জনজাতির সম্প্রদায়ের শিশু, বালক ও বালিকাদের মধ্যে পুজোর নতুন জামা বিতরণ করে সংগঠেনর সদস্যরা। এদিন প্রায় ৬৫ জন ছোটদের হাতে পুজোর নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হয়।
সংগঠনের চিফ পেট্রোন ড. মহাদেব মাজি বলেন, “আমরা গত তিনবছর ধরে এখানে দুর্গাপুজো এবং বাদান উৎসবে কোলের শিশু থেকে বাচ্চা থেকে বড়দের নতুন জামাকাপড় এবং মহিলাদের শাড়ি দিয়ে আসছি।” সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা শিক্ষক বিশ্বনাথ মিত্র বলেন, “এদিনের বস্ত্রদান সহ পরবর্তী জনহিত কর কাজের জন্য প্রতি বছরের মত এই বছরও যথেষ্ট পরিমান অনুদান পাঠিয়েছেন সংগঠনের শুভাকাঙ্খী আমেরিকার ভার্জিনিয়া প্রদেশের ফেয়ারফ্যাক্স শহরের প্রবাসী বাঙালি শিল্পপতি ও সমাজসেবী পুলক চক্রবর্তী। একই শহরের আর এক প্রবাসী বাঙালি দেবযানী সরকারও এই মহতী উদ্যোগে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া ইওর অর্গানাইজেশনের সকল সদস্য নিজেরাই যথাসাধ্য অর্থ সাহায্য করেছেন।” অন্য এক সদস্য শিক্ষক সৌরভ লায়েক বলেন, “উদ্বৃত্ত অর্থ দিয়ে আমরা অতি শীঘ্র অন্যান্য এলাকায় সেখানকার বাসিন্দাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সাহায্য করবো।”
অন্যদিকে, শ্যামডিহি সাঁওতাল পাড়ার মাম্পি সোরেন, আশিক সোরেন, মৌসুমি হাঁসদা, আরবিন হাঁসদা, লতিকা মুর্মু, অর্জুন মুর্মু, সোমনাথ মুর্মু, দিপালী হেমব্রম, রোহিত মুর্মুরা প্রতিবারের মতো এবারেও অপেক্ষায় ছিল কবে শহর থেকে তাদের প্রিয় আন্টি, আঙ্কেল, বড় দাদারা তাদের জন্য পুজোর নতুন রং-বেরঙের জামাকাপড় নিয়ে আসবে। এদিন, সেই আন্টি, আঙ্কেল ও দাদারা তাদের হাতে নতুন জামা তুলে দিতেই ওইসব খুদেদের চোখে মুখে ধরা পড়ল এক অনাবিল আনন্দ। যা অনেক না পাওয়াকে মলিন করে দেয়।
এদিনের এই বাচ্চাদের পুজোর পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানটিকে পরিচালনা করতে সাহায্য করেন অতনু চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ দাস, জয়দীপ দাশ প্রমুখ। এদিনের এই বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষিকা কঙ্কনা শুঁই, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দেবজিৎ রায়, মধুরিমা দাশগুপ্ত, শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়, সীমা মিত্র।





