অঙ্কিতা চ্যাটার্জ্জী, বার্ণপুর, পশ্চিম বর্ধমান-: বার্ণপুরের আমবাগান-তেঁতুলতলায় হতো না কোনো দুর্গাপুজো। আশেপাশের চারদিক আলোয় ভরে গেলেও ওদের মনে বিরাজ করত দুঃখের কালো মেঘ। পাশের এলাকায় ঠাকুর দেখতে গেলেও সেখানে ঠিক পাওয়া যেতনা মনের খোরাক। একরাশ বিষণ্নতা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হতো।
অবশেষে মনের দুঃখ দূর করার জন্য বছর দশেক আগে এগিয়ে আসে পাড়ার মহিলারা। তাদের উদ্যোগে পাড়ায় শুরু হয় দুর্গাপুজো। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় পুরুষরা। যেহেতু নিজেদের সামান্য চাঁদা দিয়ে পুজো হয় তাই এখানে আড়ম্বর না থাকলেও আছে আন্তরিকতা। পুজোর সমস্ত নিয়ম মেনে পুজো করা হয়। তবে দশমীর দিন সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায় সিঁদুর খেলার আনন্দ। পাড়ার মহিলারা মেতে ওঠে সিঁদুর খেলায়। তাদের বাঁধনছাড়া আনন্দের হাত ধরে উঠে আসে দোলের একটুকরো কোলাজ।
মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত হলেও পুরুষরাও পুজোতে অংশগ্রহণ করে। তারা মূলত বাজার করা সহ অন্যান্য কাজগুলো করে।
পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হলো ওই চারদিন সদস্যাদের বাড়িতে রান্না বন্ধ থাকে। সবাই একসঙ্গে পিকনিকের মুডে পুজো প্রাঙ্গনে বসে খাওয়া দাওয়া করে। ফলে পুজো তখন অন্যমাত্রা পায়।
পুজো এলেই ব্যস্ততা বেড়ে যায় তৃপ্তি, চাইনা, তন্দ্রা, সুমিতা, ছায়া, রাখী, সোমা, মিঠু, সোনালী, বর্ণালী, রিঙ্কু, মুনমুন সহ মহিলা কমিটির সমস্ত সদস্যাদের।
পুজো কমিটির অন্যতম সদস্যা সোনালী মুখার্জ্জী বললেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো পুজোর আয়োজন করি। যদি সরকারি অনুদান পাওয়া যায় তাহলে হয়তো একটু জাঁকজমক হবে। প্রশাসনের সর্বস্তরে আমরা আবেদনও করেছি।
আগামী বছর ওরা যাতে সরকারি অনুদান পায় তারজন্য স্থানীয় প্রশাসকরা কতটা উদ্যোগী হচ্ছে সেটা জানার জন্য একবছর অপেক্ষা করতেই হবে।