নিজস্ব সংবাদদাতা,আসানসোলঃ- শনিবার আসানসোলের বার্নপুরে, স্যার বীরেন্দ্র মুখার্জী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল বাঙালি অধিকার রক্ষা এবং স্বজাত্যবোধ গঠনের সংগঠন ‘বঙ্গযোদ্ধা’ র দ্বিতীয় বর্ষের জেলা সম্মেলন। যেখানে নতুন জেলা কমিটি তৈরি হল। কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক পদে মনোনীত হন সৌগত দাশগুপ্ত ও নীলকণ্ঠ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ডঃ প্রবীর রায়, কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য শুভ্রা রুদ্র।
প্রসঙ্গত, ভারতের বাঙালিদের অধিকার আদায় এবং স্বজাত্য বোধ গঠন করার লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে ও কাজ করছে বাঙালির এই সংগঠন ‘বঙ্গযোদ্ধা’। এবার প্রশ্ন উঠতেই পারে তবে কি এই সংগঠন প্রদেশিক, জাতিবিদ্বেষী,বাঙালি মৌলিবাদী? সংগঠনের মতে উত্তর না হলেও স্পষ্ট জবাব, “বুঝে নেব ততটাই যতটুকু বাঙালির। এক চুল কমও না বেশীও না।”
চাকরি ব্যবসা রাজনীতি সহ সমস্ত ক্ষেত্রে বাঙালির অধিকার অর্জনের জন্য লড়াইয়ের কথা জানিয়েছে “বঙ্গযোদ্ধা”। এই সংগঠন এক নতুন রাজনীতির জন্ম দিতে চায় যার সঙ্গে ভোটের সরাসরি কোন সম্পর্ক থাকবে না। তবে ভোটের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বাঙালি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সমস্ত দল এই সংগঠনের দ্বারা প্রভাবিত হবে। বাঙালি জাতির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তবে যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে ভোটের ময়দানে নেমে লড়তে রাজি বাঙালির এই সংগঠন। সংগঠনটি বাঙালির জাতিসত্ত্বা প্রতিষ্ঠার চিন্তাধারাকে ‘বাংলাবাদ’ বলে ঘোষণা করেছে।
হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা নয়। তাই কেন্দ্র সরকার হিন্দিকে অহিন্দিভাষী রাজ্যগুলির উপর চাপিয়ে দিতে পারেনা বলে দাবি ‘বঙ্গযোদ্ধা’র। তাই হিন্দিকে রাজ ভাষা হিসেবে প্রচার অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও বাঙালির অধিকার রক্ষার জন্য রয়েছে একগুচ্ছ দাবিদাওয়া। তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে ১) রাজ্যের সমস্ত বিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলকভাবে পড়াতে হবে। ২) রাজ্য সরকারের সমস্ত চাকরির ১০০ শতাংশে ভূমি সন্তান অধিকার আইন ও বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৮৫ শতাংশে ভূমি সন্তান অধিকার আইন চালু করতে হবে। ৩)বাঙালি বিরোধী আইন সিএএ ২০২৯, এনআরসি, এনপিআর বাতিল করতে হবে। ৪) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমস্ত ধরনের চাকরি পরীক্ষায় বাংলা পড়তে লিখতে বলতে জানা বাধ্যতামূলক সংক্রান্ত নিয়মকে সঠিকভাবে কার্যকরী করতে ৫০ নম্বরের বাংলা ভাষার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং এই পরীক্ষায় পাস করলে মেইন পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার নিয়ম চালু করতে হবে। ৫) কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরির পরীক্ষার সমস্ত প্রশ্নপত্র বাংলাতেও দিতে হবে। ৬) বাঙালি সেনাবাহিনীতে আবশ্যিকভাবে বাঙালি রেজিমেন্ট রাখতে হবে।
সর্বোপরি বাংলাকে হিন্দুস্থানীদের আখড়ায় পরিণত হতে দেওয়া যাবে না। এই চিন্তাধারাকে সামনে রেখে এদিনের এই সম্মেলন থেকে বাঙালির জাতীয়সত্ত্বা জাগিয়ে তোলার শপথ নিয়ে স্লোগান ওঠে “বাঙালি জীবনে নতুন প্রভাত নিয়ে আসবে বাংলাবাদ”।










