জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন ছিল ‘ভাঙা পায়ের একা’ এবং বিরুদ্ধে আরও কয়েকজনের লড়াই। এইরাজ্যে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে কি তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে অন্য একটা ইস্যুকে সামনে এনে? এবার হয়তো ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’ বনাম বিরোধীদের লড়াই হতে চলেছে? আগেরটায় বলা হয়েছিল সহানুভূতির ভোট। কিন্তু এবার কী বলা হবে? আপাতত জুৎসই উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত তৃণমূল বিরোধীরা।
২৪ শে এপ্রিল আউসগ্রাম হাইস্কুল ফুটবল মাঠে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে একটি নির্বাচনী জনসভার আয়োজন করা হয়। প্রধান বক্তা ছিলেন দলের চেয়ারপার্সন তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী। প্রবল তাপকে উপেক্ষা করে সকাল দশটা থেকে কার্যত মানুষের ঢল নামে। দু’টো নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে এসে পৌঁছান।
প্রায় ৪৫ মিনিটের ভাষণে বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার কথা তিনি বলবেন, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার প্রসঙ্গ তিনি তুলবেন – এটা ছিল স্বাভাবিক। নিজের বক্তব্যে নাম না করে ‘প্রচার বাবু’ ও ‘গদ্দার’ শব্দবন্ধনী তিনি কাদের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন সেটা বুঝতে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের অসুবিধা হয়নি। বক্তব্যে বেশকিছু বাক্য বন্ধনী তিনি সিপিএম ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছেন। সদ্য হাইকোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল, দেওচা-পাচামি প্রকল্প, ১০ লক্ষ চাকরি প্রস্তুত রাখা, কেন্দ্র না দিলেও রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে একশ দিনের কাজের বকেয়া প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া, ২০২৫ এর মধ্যে ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া, খুব শীঘ্রই আবাস যোজনায় ১১ লক্ষ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে অর্থ দেওয়া সহ একাধিক প্রসঙ্গ তুললেও সমর্থকদের মধ্যে সেভাবে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়নি। এমনকি কেষ্ট মণ্ডলের প্রসঙ্গ তুললেও সমর্থকদের মধ্যে হেলদোল দেখা যায়নি।
কিন্তু যখন তিনি ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’ প্রসঙ্গ তোলেন মহিলাদের মধ্যে, যাদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত, যেভাবে আলোড়ন সৃষ্টি হয় তাতে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় তৃণমূল বিরোধীরা যথেষ্ট চাপে পড়বে। এবার এটাই হয়তো তৃণমূলের পক্ষে তুরুপের তাস এবং বিরোধীদের কাছে বিপদসংকেত হতে চলেছে। এখন দেখার ‘লক্ষীর ভাণ্ডার’-এর মোকাবিলা করার জন্য বিরোধীরা কোন প্রকল্প সামনে আনে!