এই বাংলায় ওয়েব ডেক্স,কলকাতা: গত ১ মার্চ ২০২৫-এ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি প্রফেসরস অ্যাসোসিয়েশন (ওয়েবকুপা)-এর সম্মেলনে যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁর ওই সফর ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার প্রতিবাদে এসএফআই, আইসা ও ডিএসএফ-এর মতো বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
প্রতিবাদ গণতন্ত্রের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ, ভাঙচুর এবং তাঁর ওপর হামলার ঘটনা তা অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। প্রশ্ন উঠছে এটি কি প্রকৃত গণতান্ত্রিক আন্দোলন, নাকি প্রশাসনকে আরও কঠোর হবার সুযোগ করে দেওয়া?
অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের দাবিও উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। প্রশাসন কি ইচ্ছাকৃতভাবে এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে, নাকি শিক্ষাঙ্গনের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে?
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক ঘটনা হলো, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় এক ছাত্র আহত হয়েছিল। এটি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি প্রশাসনিক অব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি—এই বিতর্ক চলছেই। শিক্ষামন্ত্রী যদি ছাত্রদের দাবিকে গুরুত্ব দিতেন এবং আলোচনার পথ খুঁজতেন, তাহলে কি এমন ঘটনা এড়ানো যেত?
এই ঘটনাগুলি শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির প্রভাব এবং ছাত্র আন্দোলনের সীমা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু এর দাবিতে সহিংসতা কি গ্রহণযোগ্য? একইভাবে, প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এবং শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িচালকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কি শুধুই শিক্ষার ক্ষেত্র, নাকি রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াইয়ের ময়দান হয়ে উঠছে? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। কারণ, যদি আলোচনার বদলে সংঘর্ষই পথ হয়ে ওঠে, তবে এর প্রকৃত ক্ষতি হবে ছাত্রসমাজেরই।
এই অচলাবস্থা কতদিন চলবে এবং এর সমাধানই বা কবে হবে সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সকল পক্ষের সংযম ও দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণই পারে শিক্ষাঙ্গনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে।





