সংবাদদাতা,বাঁকুড়াঃ– বাঁকুড়ার ছাতনার পেড়া সন্দেশের খ্যাতি বাংলা ছাড়িয়ে এখন দেশজোড়া। শুশুনিয়ার পাশাপাশি ছাতনার পেড়া অন্যতম আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে। এই প্রসিদ্ধ মিষ্টান্নের ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় ছাতনার পেড়ার পরিচিতি তৈরি করেছিলেন আদি প্রহ্লাদ চন্দ্র ময়রা। ঘরের চালের দোকানের মধ্যেই তৈরি করতেন পেড়া। আজও রয়েছে সেই দোকান, তবে পাল্টেছে ছবিটা। এখনো পাওয়া যায় পেড়া।
আবার এই পেড়া সন্দেশের সঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্রের এক গভীর যোগ রয়েছে। যার স্মৃতি আজও বহন করে চলেছেন ছাতনাবাসী। জানা যায় ১৯৬৭ সালে “আশিতে আশিওনা” সিনেমার শুটিং হয়, ছাতনার শুশুনিয়া পাহাড়ে। সেই সময় অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয় দোকান থেকে পেড়া কিনে খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং বাড়ির জন্যও নিয়ে গিয়েছিলেন। যে দোকানটি থেকে তিনি পেড়া কিনেছিলেন সেই দোকানটি আজও রয়েছে। রমরমিয়ে বিক্রি করছে ছাতনার প্রসিদ্ধ পেড়া।
দোকানের পেড়া প্রস্তুতকারক জানালেন এই প্রসিদ্ধ পেড়া তৈরির প্রণালী। খাটি দুধ থেকে তৈরি হয় এই পেড়া। প্রথমে দুধকে গরম করে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় ক্ষীর। তারপর প্রতি এক কেজি ক্ষীরে মেশানো হয় ১০০ গ্রাম চিনি। ক্ষীরের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে পাক দিয়ে মন্ড তৈরি করে ছাঁচে ফেলে দিলেই তৈরি হয়ে যায় বিখ্যাত ছাতনার পেড়া। মুখে দিলেই যা মিলিয়ে যায়। সব থেকে ছোট পেড়ার দাম ৫ টাকা, মাঝারি সাইজের দাম ১০ টাকা এবং সবচেয়ে বড় পেড়াটির দাম কুড়ি টাকা।
বাঁকুড়ার ছাতনার লৌকিক ইতিহাসের পৃষ্ঠপোষক এবং ক্ষেত্র সমীক্ষক স্বরাজ মিত্র জানান রানী আনন্দ কুমারীর সময় থেকেই এই বিশেষ মিষ্টান্নের প্রসিদ্ধি ছড়িয়েছিল, যা দেখা গেছে ত্রিগুনা প্রসাদ সিং দেওর আমল পর্যন্ত। আজও তার জনপ্রিয়তা কমেনি। একইভাবে বাঙালির রসনা তৃপ্তি করে চলেছে ছাতনার বিখ্যাত পেড়া সন্দেশ।





