নিউজ ডেস্কঃ ভোট যুদ্ধের দামামা বেজেছে আগেই, দুই দফায় রাজ্যের একাধিক লোকসভা কেন্দ্রের ইতিমধ্যে ভোটযুদ্ধে সমাপ্ত হলেও এখনও বাকি পাঁচ দফার ভোট। তাই নাওয়া-খাওয়া ভুলে আপাতত ভোট প্রচারে ব্যস্ত শাসক, বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকেরা। বসে নেই রাজ্যের নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে এমনকি মুখ্যমন্ত্রীও। রাজ্যের একাধিক জেলায় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে বিভিন্ন হেভিওয়েট নেতা থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের উপস্থিতি আগেই নজরে পড়েছে, তবে এবার প্রার্থীদের হয়ে সরাসরি ভোট প্রচারে ময়দানে নামলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দুই দিনাজপুর, ও ২৪ পরগনা থেকে শুরু করে নদীয়া জেলা সব জায়গাতেই বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের হয়ে ভোট প্রচারে জনগণের কাছাকাছি পৌছাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে রোড শোয়ে জনগণের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলছে পুরোদমে। তারই ছবি ধরা পড়লো নদীয়া জেলার শান্তিপুরে। রবিবার জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার উত্তর ২৪ পরগনার গয়েশপুর থেকে পৌঁছায় নদীয়া জেলার শান্তিপুরে। হেলিকপ্টার থেকে অবতরণ করেই পূর্বনির্ধারিত সূচী অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য, পৌর চেয়ারম্যান অজয় দে ও রানাঘাট লোকসভার এবারের প্রার্থী রুপালি বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে রোড শোয়ে যোগ দেন। শান্তিপুরের থানার মোড় থেকে বইগাছি পর্যন্ত পায়ে হেঁটে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রূপালি বিশ্বাসের সমর্থনে শান্তিপুরের জনগণের কাছে ভোট প্রচার করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রানাঘাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রূপালি বিশ্বাসের বিষয়ে জানা গেছে, এই প্রথম রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছেন তিনি। সদ্য স্বামীহারা গৃহবধূ বর্তমানে দেড় বছরের এক সন্তানের মা। ফলে এহেন এক সাধারণ গৃহবধূ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কীভাবে বিরোধীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এনিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছিল তেমনি উঠেছিল সদ্য পতি বিয়োগান্ত গৃহবধূর প্রতি জনগণের সমবেদনার তত্ত্বও। কিন্তু, নদীয়া জেলায় বিরোধী বিজেপি দল যেখানে ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে সেখানে এরকম একজন অদক্ষ প্রার্থীকে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড় করানো মুখ্যমন্ত্রীর মাষ্টার স্ট্রোক বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর সেইকারণেই প্রার্থীকে পূর্ণ সমর্থন দিতে কলকাতা থেকে নদীয়া জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর ঝটিকা সফর। রবিবার রোড শোয়ের পাশাপাশি শান্তপুর প্রতিবন্ধী সংগঠন থেকে শুরু করে একাধিক মহিলা সংগঠনের সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানানোর পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া তাঁর কাছে তুলে ধরেন। এর আগে রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোট প্রচারে চলতি মাসের ২০শে এপ্রিল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সেখানে শাসকদল তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা সভায় দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুরে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বালুরঘাটের তাঁর নিজের পছন্দের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের সমর্থনে লোকসভা নির্বাচন পূর্ববর্তী সভা করেন তিনি। সেখানে পাল্টা বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। ফলে নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ঝটিকা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন প্রার্থীদের হয়ে জনগণের সমর্থন আদায় করতে সচেষ্ট তেমনি নির্বাচনের আগে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে পেপটক আসন্ন লড়াইয়ের প্রস্তুতি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।