নীহারিকা মুখার্জ্জী চ্যাটার্জ্জী বাগনান; হাওড়া- : সদ্য কুড়ি অতিক্রম করা বাগনান কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী পৌলভীর আর্থিক সামর্থ্য না থাকলেও দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে ছোটো থেকেই তার মনের মধ্যে লুকিয়ে আছে। তাই নিজের গৃহশিক্ষকতা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে উপার্জিত অর্থ অপচয় না করে সেই সামান্য অর্থ নিয়েই সে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মা ‘অন্নপূর্ণা’র মত তাদের মুখে তুলে দিয়েছে খাবার। কখনো কখনো নতুন পোশাক কিনে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সবুজায়নের লক্ষ্যে নিজের জন্মদিনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছে গাছের চারা। ওদিকে নিজের বাড়িতে অভাবের ছাপ স্পষ্ট।
এবার তার এইসব সমাজসেবামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে সম্মাননা প্রদান করল সে যে কলেজের ছাত্রী হাওড়ার সেই বাগনান কলেজ। তার হাতে তুলে দিল একটি শংসাপত্র ও ছোট্ট উপহার।
একাডেমিক থেকে শুরু করে উপস্থিতি, পাঠাগার ব্যবহার সহ বিভিন্ন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করা ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য গত কয়েক বছর ধরে বাগনান কলেজ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হাতে শংসাপত্র সহ সামান্য কিছু উপহার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটলনা। গত ২০ শে জুলাই কলেজ চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২২-২০২৩ সালে কৃতি প্রায় চার শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এদেরই অন্যতম ছিল পৌলভী। ‘বেস্ট ভলেন্টিয়ার ইন সোস্যাল ওয়ার্কার’ হিসাবে সে পুরস্কৃত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক প্রসেনজিৎ কুমাৱ, শ্রাবণী বসু কুন্ডু,ড. দীপান্বিতা দাস, অধ্যক্ষ বাদল কুমার মাইতি সহ অন্যান্য অধ্যাপকরা।
সম্মাননা পেয়ে উৎফুল্ল পৌলভী বলল- পুরস্কার পেতে সবার ভাল লাগে। যদি সেই পুরস্কার প্রিয় শিক্ষকদের কাছ থেকে পাওয়া যায় তার তাৎপর্য আলাদা হতে বাধ্য। আমি আজ খুব খুশি।
অন্যদিকে কলেজের অধ্যক্ষ বললেন – আমার কলেজের ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য আমরা এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছি। আমাদের কলেজে অনেকেই ‘প্রথম শ্রেণি’ -তে উত্তীর্ণ হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের কলেজের ছাত্রী পৌলভী সমাজ সেবায় কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছে। ভবিষ্যতেও আমরা তার পাশে থাকার চেষ্টা করব।