eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসানসোলের কুম্ভ মেলায় পদপিষ্টকে নগদে ক্ষতিপূরণ, বিতর্ক

আসানসোলের কুম্ভ মেলায় পদপিষ্টকে নগদে ক্ষতিপূরণ, বিতর্ক

সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– আসানসোলের কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মৃতের পরিবারকে নগদে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন উঠেছে সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা নগদে কেন দেওয়া হল? এমনকি ওই টাকা সংক্রান্ত কোনো নথিও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যার ফলে মৃতের পরিবার টাকা ব্যঙ্কে টাকা জমা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এমনকি মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট না দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন মৃতের স্ত্রী ও পরিজনেরা।

প্রসঙ্গত গত মৌনী অমাবস্যায় প্রয়াগরাজে কুম্ভস্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় জামুড়িয়ার কেন্দা গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের বিনোদ রুইদাসের। ওই দুর্ঘটনার পর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মৃতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তির নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা বিনোদ রুইদাসের পরিবারের হাতে তুলে দিলেন উত্তর প্রদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা। গত বুধবার উত্তর প্রদেশ সরকারের পুলিশ ও সরকারি প্রতিনিধি কেন্দায় এসে নগদ ৫ লক্ষ টাকা পরিবারের হাতে তুলে দেন বলে জানান মৃতের স্ত্রী সুলজা।

সুলজা জানান, গত ১৯ শে মার্চ সকালে তার পরিবারের এক সদস্যের কাছে একটি ফোন আসে। ফোনে এক ব্যক্তি নিজেকে উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রতিনিধি বলে দাবি করেন এবং জানান তাঁরা সুজলা দেবীর বাড়ি যাচ্ছেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে কেন্দার বাড়িতে উত্তরপ্রদেশের নম্বর পেল্ট লাগানো একটি গাড়ি পৌঁছয়। গাড়ি থেকে পুলিশের পোশাকে তিন ব্যক্তি ও সাদা পোশাক পড়া এক ব্যক্তি নামেন। সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তি সুলজাকে জানান তাঁরা উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে এসেছেন। এরপর সুলজার হাতে নগদ ৫ লক্ষ টাকার একটি খাম তুলে দেন এবং তিনি আরও বলেন এটি প্রথম কিস্তি। এভাবে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। এরপর একটি সাদা কাগজে তাঁরাই লেখেন ৫ লক্ষ টাকা পেলাম। সেই কাগজে সুলজাকে সই করান ও মৃত বিনোদের বাবা, মায়ের আঙুলের ছাপ নেন।

আর এই ক্ষতিপূরণের ধরন নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ একে তো কোনোরকম ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কুম্ভ থেকে বাড়িতে এসেছিল বিনোদের মৃতদেহ। এরপর কোনো সরকারি নথি ছাড়াই দেওয়া হল ক্ষতিপূরণ। সুলজার মতে কোনো রকম কাগজপত্র ছাড়া ওই টাকা নিয়ে তাঁরা ফ্যাসাদে পড়েছে। ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা।

বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী প্রশ্ন তোলেন, কোন সরকারি নথি ছাড়া এভাবে চোরের মত নগদ টাকা গোপনে কেউ দিয়ে যেতে পারে? সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে যেখানে ঢাকঢোল পিটিয়ে সাহায্য করা হয় সেখানে কেন এত গোপনীয়তা? কারা এসেছিলেন তা জানতে তদন্ত প্রয়োজন।

অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য নির্বাহী কমিটির সদস্য জিতেন্দ্রনাথ তিওয়ারি দাবি করেন, বিনোদের দেহ আসার পরে তিনি তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং নিজের ফোন থেকে বিনোদের স্ত্রীর সাথে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথা বলিয়ে দিয়েছিলেন। শুভেন্দু ফোনেই বিনোদের স্ত্রীকে, উত্তরপ্রদেশ সরকার ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেবে বলে আশ্বস্ত করেন। পরে শুভেন্দু উত্তরপ্রদেশের মুখ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। জিতেন্দ্রর কথায়, “এতে প্রমাণ হলো বিজেপি পরিচালিত উত্তর প্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মৃতদের পরিবারগুলোকে বঞ্চনা করার যে অভিযোগ উঠছে তা মিথ্যা।” পাশাপাশি আগামীতে উত্তরপ্রদেশ সরকার মৃতদের সার্টিফিকেট ইস্যু করবেও বলেও এদিন দাবি করেন তিনি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments