সন্তোষ মণ্ডল, আসানসোলঃ- রানিগঞ্জ থানার দ্বারস্থ ইসিএলের ম্যানেজার। ইসিএলের জমি দখল করে ভরাটের অভিযোগ আসানসোল পুরনিগমের তৃনমুলের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে। আসানসোল পুরনিগমের ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর নেহা সাউয়ের বিরুদ্ধে ইসিএলের জমি দখল করে, তা ভরাটের অভিযোগ উঠল। নেহা সাউ কাউন্সিলারের পাশাপাশি তৃনমুল মহিলা কংগ্রেসের রানিগঞ্জ ব্লকের সভানেত্রী পদেও আছেন। জমি দখল করে, তা ভরাট করার কথা জানতে পারার পরেই ইসিএলের সাতগ্রাম এরিয়ার পিওর শিয়ারসোল কোলিয়ারির ম্যানেজারের পক্ষ থেকে নেহা সাউয়ের বিরুদ্ধে রানিগঞ্জ থানায় এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও নেহা সাউ সরাসরি ইসিএলের জমি দখলের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি কেবলমাত্র সেই জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে, সেখানে কিছু গাছ লাগাচ্ছি।” অন্যদিকে, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র পারিষদ দলের ব্লক স্তরের নেতা গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি সংবাদ মাধ্যম থেকে এদিনই এই অভিযোগটা শুনেছি। আমরা অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেব। দলের কোন নেতা বা কর্মী কোথাও এই ধরনের কোন অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত থাকলে নেতৃত্ব অবশ্যই তা গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। শুনেছি ইসিএলের তরফে রানিগঞ্জ থানায় এই ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
ইসিএলের পক্ষ থেকে রানিগঞ্জ থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘রানিগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড়ের কাছে ৬-৭ নম্বর ইনক্লাইন সংলগ্ন এলাকায় নেহা সাউ সংস্থার জমি ভরাটের কাজ করছেন। একই সঙ্গে ঐ জমি তিনি দখলও করছেন। অবিলম্বে এই অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা সহ, তা এফআইআর করে তার বিরুদ্ধে আইনমত ব্যবস্থা নেওয়া হোক বলে ইসিএলের সাতগ্রাম এরিয়ার পিওর সিয়ারশোল কোলিয়ারির সিনিয়র ম্যানেজার জানিয়েছেন। যদি তা না নেওয়া হয় তাহলে এই ধরনের কাজের প্রবণতা আরো বাড়বে।”
জমি দখল করে, তা ভরাটের অভিযোগ নিয়ে নেহা সাউ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “ঐ জমিতে গাছ লাগিয়ে আমি কোন অন্যায় করিনি। ঐ এলাকায় প্রচুর পরিমাণ গোবর জমা হয়ে থাকতো। তার থেকে এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছিল। সে জন্য আমি পুরনিগমের সাথে কথা বলে পুরনিগমের কর্মীদেরকে দিয়ে গোটা জায়গাটি পরিষ্কার করিয়ে সেখানে গাছ লাগিয়েছি। তবে তিনি এই কাজের জন্য যে ইসিএলের কাছ থেকে কোনো এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নেননি তা তিনি স্বীকার করেছেন।” পাশাপাশি তিনি এও বলেন, “গাছ লাগানো যদি অপরাধ হয় তাহলে আমি আরো গাছ লাগাব।”
শাসক দলের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থার জমি দখল করার অভিযোগ উঠতেই আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী দল। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস মানেই দখল ও লুঠ। তা যে কোন জিনিসই হোক না কেন। রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের মদতে শুধু রানিগঞ্জ নয়, গোটা আসানসোল মহকুমার রেল, ইস্কো, ইসিএল, হিন্দুস্থান কেবলস সহ সব জায়গায় একের পর এক জমি দখল করে সেখানে ঘরবাড়ি বানানো হচ্ছে। এমনকি, সেইসব জমিতে দলের অফিসও তৈরি করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গতঃ, ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর জনৈক মালতি যাদব নামে এক মহিলা এই জমি দখলের কথা জানিয়ে আসানসোল পুরনিগমের মেয়রকে একটি চিঠি লিখেছিলেন।