সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব ধরনের বেআইনি কাজ বন্ধ করার কথা বললেও তার দলের বিধায়ক, কাউন্সিলর এবং ছোট নেতাদের সহযোগিতায় আসানসোল শহর জুড়ে চলছে নানা দুর্নীতি তথা অবৈধ কাজকর্ম। এমনই অভিযোগ তুলে সরব হল আসানসোলের সাউথ ব্লক কংগ্রেস নেতৃত্ব। চার দফা দাবিতে বুধবার তারা পুরনিগমে একটি স্মারকলিপি দেয়। পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় এদিন না থাকায় তার অনুপস্থিতিতে এই স্মারকলিপি দেওয়া হয় চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়কে।
এই বিষয়ে আসানসোল সাউথ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি শাহ আলম খান জানান, চারটি দাবির একটি স্মারক লিপি আসানসোল পুরনিগমে দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অবৈধ পার্কিং, জলাশয় ভরাট, অবৈধ বাড়ি নির্মাণ, জমির অবৈধ কারবার ও শহরের ব্যস্ততম এলাকা থেকে ভলভো বাসস্ট্যান্ড সরানো।
স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ পার্কিংয়ে নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে বেশি অর্থ নেওয়া হচ্ছে। নিয়ম লঙ্ঘন করে ৩ ঘন্টার পরিবর্তে ১ ঘন্টা পর দ্বিগুন পার্কিং ফিজ নেওয়া হচ্ছে। অবাধে এইসব বেআইনি কাজ চললেও পুরনিগম কর্তৃপক্ষ উদাসীন থাকছে। এছাড়া ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মতলাও ও রামতলাও নামে দুটি পুকুরের একাংশ ভরাট করা হচ্ছে। কাল্লা এলাকায় পাথর খাদান ভরাট করে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এই বেআইনি কারবার দেখার কেউ নেই। কোথাও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর পাশাপাশি শহরের মধ্যে জিটি রোড সংলগ্ন ব্যস্ততম এলাকায় ভলভো বাসস্ট্যান্ডটি থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে। অথচ শহরের বাইরে দুটি বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলি কোনোটিই চালু হয়নি।
অন্যদিকে, এইসব দাবিতে আরো এক কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি আসানসোল পুরনিগম ও তৃণমূল নেতাদের একাংশকে নিশানা করে বলেন, “এখন আসানসোল পুরনিগম এলাকায় যা কিছু বেআইনি কাজ হচ্ছে, তা তৃণমূল নেতাদের সমর্থন ছাড়া সম্ভব নয়। রাজ্যে যারাই বেআইনি কাজ করছে তারাই তৃণমূলের সমর্থক এবং তৃণমূল নেতারা তাদের মাথায় হাত রেখেছেন। সেই কারণেই তারা বিনা বাধায় এইসব কাজ করে যাচ্ছেন। একদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব ধরনের বেআইনি কাজ বন্ধ করার কথা বললেও তার দলের বিধায়ক, কাউন্সিলর এবং ছোট নেতারা অবৈধ কাজে জড়িত রয়েছেন।” তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন যে, “কয়লা চোরাচালানের সাথে যুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এখন দুর্গাপুর থেকে ধানবাদ পর্যন্ত জাতীয় সড়ক বরাবর জমি মাফিয়াদের সাথে যোগ দিয়েছেন। এখন তাদের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হলো এই অবৈধ জমি ব্যবসা।”
অন্যদিকে আসানসোলের পুর চেয়ারম্যান এই বিষয়ে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি বৈঠক করে স্মারকলিপিতে থাকা দাবি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।