জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জীঃ– অনেক টালবাহানার পর অবশেষে কেন্দ্র সরকার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অর্থ বরাদ্দ করল। যদিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে অনেক শর্ত। এদিকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে পাওয়া যায়নি একশ দিনের কাজের টাকা। সম্প্রতি কেন্দ্র সেই টাকা দিতে সম্মত হয়েছে। খবরে প্রকাশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নাকি রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে ফোন করে সুখবর শুনিয়েছেন। যদিও যতক্ষণ না সেই অর্থ রাজ্যের কোষাগারে ঢুকছে ততক্ষণ অবশ্য ভরসা নাই। দুটি প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও মূলত দুর্নীতির কারণেই এই বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় টিম আসে। তারা তদন্ত করে। দুর্নীতির আঙুল ওঠে এক শ্রেণির তৃণমূল নেতার দিকে। সঙ্গত কারণে বহু ক্ষেত্রে এলাকার বাসিন্দাদের কাছে সেই অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য ছিল।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মূল লক্ষ্য হলো প্রতিটি মানুষের মাথার উপর ছাদ তৈরি করে দেওয়া। বর্তমান যুগে ভাবনাটা ছিল সদর্থক। স্টেশনের ওয়েটিং রুম, রাস্তার ধারে বাড়ির বাইরের বারান্দায় ইত্যাদি জায়গায় অথবা খোলা আকাশের নীচে হাজার হাজার মানুষকে শুয়ে থাকতে দ্যাখা যায়। কারণ এদের মাথার উপর ছাদ নাই। আবার অনেকের মাথায় ছাদ থাকলেও সেটা বসবাসের উপযুক্ত নয়। বর্ষাকালে বৃষ্টির সময় জল পড়ে। পূর্ণিমাতে চাঁদ উঁকি দেয়। ঝড়ের সময় ঘর দুলতে থাকে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে।
অন্যদিকে একশ দিনের কাজের জন্য গ্রামীণ মানুষের হাতে টাকা থাকে। ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একশ দিনের টাকা বন্ধ থাকায় এবার পুজোর মুখে মানুষের হাত ছিল শূন্য। ফলে পুজোর বাজার সেভাবে জমেনি। কাপড়ের দোকানগুলো কার্যত ফাঁকা ছিল।
দুটি ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ। একশ দিনের কাজের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে অনেক সময় কার্ড হোল্ডার কাজ না করেও নাকি টাকা পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার থেকে একটা বড় অংশের টাকা নিচ্ছে তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতা। আবার কখনো মাটি কাটার কাজে জেসিবি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জেসিবির মালিক স্হানীয় কোনো তৃণমূল নেতা। ক্ষোভ হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলছেনা।প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ক্ষেত্রে দ্যাখা যাচ্ছে অনেক প্রকৃত প্রাপকের পরিবর্তে অন্য জন ঘর পাচ্ছে। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে উপভোক্তাদের কাছ থেকে আগাম টাকা নেওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। অথবা টাকা না দিলে নাকি দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত বহু অভিযোগ নাকি প্রমাণ সহ কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।দুটি ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ। একশ দিনের কাজের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে অনেক সময় কার্ড হোল্ডার কাজ না করেও নাকি টাকা পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার থেকে একটা বড় অংশের টাকা নিচ্ছে তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতা। আবার কখনো মাটি কাটার কাজে জেসিবি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জেসিবির মালিক স্হানীয় কোনো তৃণমূল নেতা। ক্ষোভ হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলছেনা।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ক্ষেত্রে দ্যাখা যাচ্ছে অনেক প্রকৃত প্রাপকের পরিবর্তে অন্য জন ঘর পাচ্ছে। শুধু তাই নয় অনেক ক্ষেত্রে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে উপভোক্তাদের কাছ থেকে আগাম টাকা নেওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। অথবা টাকা না দিলে নাকি দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত বহু অভিযোগ নাকি প্রমাণ সহ কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
আবাস যোজনায় দুর্নীতি রোধের লক্ষ্যে মুখ্যসচিব কড়া নির্দেশ জারি করেছেন। ত্রিস্তরীয় চেকিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইসিডিএস ও আশা কর্মীদের প্রাথমিক চেকিং করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি সামনে এসে যাবে। আর এতেই এক শ্রেণির তৃণমূল নেতাদের গোঁসা হচ্ছে। অভিযোগ উঠছে তারা নাকি আইসিডিএস কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। এই সংক্রান্ত অভিযোগ প্রশাসনের কাছে জমাও নাকি পড়েছে।
এই মুহূর্তে সিবিআই, ইডি সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি এই রাজ্যে সক্রিয় আছে। দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকজন প্রথম সারির তৃণমূল নেতা সিবিআই ও ইডির রেডারে আছে। এমনিতে শিক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল ব্যতিব্যস্ত। তারপরও এই দুর্নীতির অভিযোগ!! স্বয়ং ডিএম তদন্তে মাঠে নেমেছেন। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে সুখকর নয়। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। এখন বাড়ি তৈরি শুরু করার পর কেন্দ্র সরকার যদি টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে পরিস্থিতি কোন দিকে যেতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। দীর্ঘদিন ধরে একশ দিনের কাজ করা সত্ত্বেও টাকা না পাওয়ার জন্যও মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।
অনেকের বক্তব্য পঞ্চায়েত থেকে আবাস যোজনার প্রাপকের তালিকা সংশ্লিষ্ট গ্রামের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্হানে টাঙিয়ে দেওয়া হোক এবং সেটা মাইকে করে পাড়ায় পাড়ায় প্রচার করা হোক। এতে হয়তো দুর্নীতি কমবে এবং অবৈধ প্রাপকদের যেমন নাম বাদ যাবে তেমনি প্রকৃত প্রাপকরা বঞ্চিত হবেনা।
এখন দ্যাখার দুর্নীতি রোধ করতে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করে।