নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- শনিবার দুর্গাপুর ডিএভি মডেল স্কুলে আয়োজিত হল বার্ষিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। স্কুলেরই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘আরোহণ’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে এদিন সংবর্ধনা দেওয়া হয় দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর কৃতী ছাত্র-ছাত্রীদের।
অনুষ্ঠানের প্রথমেই আমন্ত্রিত অতিথিদের তিলক পরিয়ে চারা গাছ প্রদান করে বরণ করে নেওয়া হয়। তারপর গায়ত্রী মন্ত্র সহযোগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা করেন অতিথিগণ। স্কুল কয়্যার গ্রুপের উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ ঘটে। এরপর একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেছিলেন ব্রিজেন্দ্র প্রতাপ সিং (ডিরেক্টার ইনচার্জ, বার্নপুর দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট)। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি দত্ত (চেয়ারম্যান আসানসোল – দুর্গাপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি) এবং এ.কে. আজাদ ইসলাম ( WBCS EXE, কমিশনার , ডি এম সি, সিটি সেন্টার, দুর্গাপুর)। এছাড়াও বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডঃ মঞ্জুশ্রী গাঙ্গুলী ( এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, হেল্থ ওয়ার্ল্ড হসপিটাল) । এছাড়াও উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ডিএভি এল এম সি সদস্য এবং ডি এ ভি পশ্চিমবঙ্গ শাখার বিভিন্ন প্রিন্সিপাল মহোদয় গণ। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষা ও পশ্চিমবঙ্গ ডি এ ভি সংস্থার আঞ্চলিক অধিকর্তা পাপিয়া মুখার্জি অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর সিবিএসসি বোর্ড পরীক্ষায় সফল শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বিদ্যালয়ের বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। রিপোর্ট থেকে জানা যায় এবারের দশম শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ৩৯১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯০ শতাংশ ও তার বেশি নম্বর পেয়েছে ১৪২ জন। দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় ৫৬৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০৫ জন ৯০শতাংশ ও তার বেশি নম্বর পেয়েছে । দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর সিবিএসসি বোর্ড রেজাল্ট ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা, খেলাধুলা , সহপাঠক্রমিক বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাফল্যের কথাও তিনি তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, শুধুমাত্র পড়াশোনা নয় পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা বা অন্যান্য সহপাঠ্যক্রমিক কার্যাবলীর মান উন্নয়নের চেষ্টা করতে হবে যাতে ছাত্রছাত্রীরা কখনোই পড়াশুনাতে তাদের উৎসাহ হারিয়ে না ফেলে। তাদের প্রতিভা বিকশিত করার আদর্শ স্থান বিদ্যালয়। এই সাফল্যের পিছনে শিক্ষক শিক্ষিকা অশিক্ষক কর্মচারী সকলের সহযোগিতার কথা তিনি উল্লেখ করেন।
অতিথি গণ তাঁদের ভাষণে সকল কৃতি ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানান ও বলেন, শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা, তাদের শৃঙ্খলাবোধ প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁরা আরো বলেন শিক্ষার্থীদের ওপর অভিভাবকগণ যেন তাঁদের মতামত চাপিয়ে না দেন। শিক্ষার্থীদের সহজাত প্রতিভা যেন পূর্ণতা পায়। প্রধান অতিথি তাঁর ভাষণে বলেন সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাকেও গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে আমরা শিখে চলেছি। আর এই শেখাই আমাদের নতুন পথ দেখাবে। তিনি আরো বলেন শিক্ষার্থীরা সকলের আশীর্বাদ নিচ্ছে এটা আমাদের দেশের সংস্কৃতি। তাই শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা যেন তারা না ভোলে।
এরপর শুরু হয় একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মূল ভাবনা ছিল ” বিজয়ের প্রতিধ্বনি”। এই মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা নৃত্য, সমবেত সংগীত, ইত্যাদি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিবেশন করে এবং দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে । এরপর কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে শংসাপত্র ও মেডেল তুলে দেন অতিথিগণ।