এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ– আজ ৭ নভেম্বর, আজকের শুভ দিনটি সারা দেশ জুড়ে পালন করা হচ্ছে দেব দীপাবলি। দেব দীপাবলি অর্থাৎ দেবতাদের দীপাবলি। এই উত্সবটি দীপাবলির ঠিক ১৫ দিন পরে প্রতি বছর কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয়। এবছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে ৭ নভেম্বর বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট থেকে। পূর্ণিমা তিথি থাকবে ৮ নভেম্বর বিকাল ৪.৩১ পর্যন্ত। উদয় তিথি অনুসারে, ৮ নভেম্বর দেব দীপাবলি উদযাপন করা উচিত। কিন্তু এদিন চন্দ্রগ্রহণ থাকায় পূজা মূহুর্ত বিবেচনা করে ৭ নভেম্বর দেব দীপাবলি উদযাপিত হচ্ছে।
পুরাণ মতে, এই দিনে ভগবান শিব ত্রিপুরাসুরকে হত্যা করেছিলেন, তাই এটিকে ত্রিপুরারি পূর্ণিমাও বলা হয়। পুরাণ কাহিনী অনুযায়ী জানা যায় তিন অসুরভ্রাতা তাঁদের ত্রিপুর নামে সুরক্ষিত তিন দুর্গে থাকতেন। এই তিন ভাই ব্রহ্মাকে তপস্যায় সন্তুষ্ট করে তিন অভেদ্য এবং চলমান দুর্গ লাভ করেছিলেন। বিমানের মতো এই দুর্গ নিয়ে তাঁরা ভ্রমণ করতেন বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে। তাঁদের অত্যাচারে পর্যুদস্ত হয়ে উঠত সৃষ্টি। এই সমস্যার প্রতিকারে দেবতারা শিবের দ্বারস্থ হন। ব্রহ্মার বর অনুযায়ী, কার্তিক মাসের এই পূর্ণিমা তিথিতে যখন তিনটি দুর্গ আকাশপথে ঘুরতে ঘুরতে এক জায়গায় আসে, তখন একটি মাত্র তীর ছুড়ে তা অসুর-সহ ধ্বংস করে দেন শিব। মহাদেব অর্ধনারীশ্বর রূপে বধ করেছিলেন ত্রিপুরাসুরকে। এই ঘটনার পর থেকেই শিবকে ত্রিপুরারী বলে ভূষিত করেছিলেন স্বয়ং বিষ্ণু। অন্যদিকে ত্রিপুরাসুর বধের পর সব দেব-দেবী একসঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন ও দীবাবলি উদযাপন করেন। সেই থেকে কার্তিক পূর্ণিমার দিনে দেব দীপাবলি উদযাপনের রীতি চলে আসছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী এই দিন দেবতারা কাশীর পবিত্র ভূমিতে অবতরণ করেন এবং বারাণসীর গঙ্গা নদীর ঘাটে দীপাবলি উদযাপন করেন। তাই এই দিন বারাণসীর ঘাটগুলি মাটির প্রদীপের আলোতে সাজিয়ে তোলা হয়। এদিন কাশী শহরে এক অন্যরকম উচ্ছ্বাস দেখা যায়। দেব দীপাবলির রাতে গঙ্গা ঘাটের দৃশ্য মন্ত্রমুগ্ধকর হয়ে ওঠে। এই বছর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রায় ১০ লক্ষ প্রদীপে সেজে উঠবে কাশীর ৮৪টি ঘাট।
এছাড়া পুরাণ মতে এই কার্তিক পূর্ণিমাতেই ভগবান বিষ্ণু মত্স্যাবতারের রূপ ধারণ করেছিলেন। হিন্দু শাস্ত্র মতে অধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য এদিন পূজা অর্চনা ও গঙ্গা স্নানের গুরুত্ব অপরিসীম। এদিন গঙ্গা স্নান করে দীপ দান করার প্রথা আছে। এছাড়াও এদিন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পূজা স্থলে, ও বাড়ির সদর দরজায় দীপ দান করা শুভ ফলপ্রদায়ী বলে মনে করা হয়।