নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ আবারও দুর্গাপুরের নাম উজ্জ্বল করল দুর্গাপুরের ডিএভি স্কুল। সিবিএসই বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় দুর্গাপুরের নাম উজ্জ্বল করল দুর্গাপুর ডিএভি মডেল স্কুলের ছাত্র শুভদ্বীপ হাজরা। বিজ্ঞানের ছাত্র শুভদ্বীপ ৪৯৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সম্ভাব্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে সে। ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৪ (প্রায় ৯৯ শতাংশ) নম্বর পেয়ে দুর্গাপুরের শুভদ্বীপ হাজরা ডিএভি স্কুলেও প্রথম স্থান অধিকার করেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গেছে, এই বছর সিবিএসই বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ডিএভি মডেল স্কুল থেকে পরীক্ষায় বসেছিল ৪৫৪ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে সকলেই তাদের পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা গেছে স্কুলের তরফে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শুভদ্বীপ হাজরা ৯৮.৮ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পাশাপাশি কমার্স বিভাগের খুশি পোহার ও রুচিরা পুরকায়স্থ পেয়েছে ৯৭.৪ শতাংশ নম্বর। ডিএভি ছাড়াও দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় মহাবিদ্যালয়, হেমশীলা মডেল স্কুলের পড়ুয়াদেরও এবছরের নম্বরের হার বেশ সন্তোষজনক। তবে একদিকে সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় যখন রাজ্যের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম স্থান দখল করে দুর্গাপুরের নাম উজ্জ্বল করল দুর্গাপুরের পড়ুয়া শুভদ্বীপ হাজরা তখন দুর্গাপুরে নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্রে NIT পরীক্ষা দিতে এসেও পরীক্ষায় বসতে পারল না তানিয়া বৎস নামে এক পরীক্ষার্থী। জানা গেছে, রবিবার ডাক্তারি পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা NATIONAL ELEGIBILITY ENTRANCE TEST এর পরীক্ষা দিতে দুর্গাপুরে এসেছিল আসানসোলের হিলভিউ এলাকার বাসিন্দা ছাত্রী তানিয়া বৎস। অ্যাডমিট কার্ডে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার সিট পড়েছিল দুর্গাপুরের দিল্লি পাবলিক স্কুলে। সেইমতো তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তানিয়া ওই স্কুলে নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছায় তারা। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা দেখেন ওই স্কুলে NIT পরীক্ষার কোনও সিটই পড়েনি। এরপর তারা দুর্গাপুর পাবলিক স্কুল গিয়ে খোঁজ নিলে সেখানে তার অ্যাডমিট কার্ডের রোল নম্বর না মেলায় সেখানেও তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। হতাশ ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ওই পড়ুয়া ও তার পরিবার এরপর বার বার NIT এর হেল্পলাইনে বার বার ফোন করা সত্ত্বেও ওই প্রান্ত থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ ওই পরীক্ষার্থীর। অগত্যা এরপর তানিয়া বৎস নামে ওই পরীক্ষার্থী ও তার পরিবার দুর্গাপুরে পুলিশের দ্বারস্থ হলে পুলিশও শেষপর্যন্ত তাদের কোনও সাহায্য করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত বছর আসানসোলের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা নিয়ে রাজস্থানের কোটায় প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তানিয়া। ইচ্ছা ছিল এইবছর নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন পূরণ করার। কিন্তু প্রবেশিকা পরীক্ষার নিয়ামক সংস্থার ভুল ও দায়িত্বহীনতার জেরে সেই প্রবেশিকা পরীক্ষাতেই বসতে পারল না তানিয়া। এই তো আমাদের দেশের শিক্ষার হাল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিয়ামক সংস্থার হেল্পডেস্কে ফোন করে গেলেও অপর প্রান্ত থেকে কোনও উত্তর না মেলায় দিনের শেষে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েই বাড়ি ফিরতে হল তানিয়া ও তার পরিবারকে। কিন্তু তাতেও ভেঙে পড়তে নারাজ ডাক্তারি পড়ার স্বপ্নে বুঁদ তানিয়া বৎস। তাই বাড়ি ফেরার আগে সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়েই আর্জি জানিয়ে গেল ওই পরীক্ষার্থী, ফনীর জেরে ওড়িশায় নিট পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেছে, তাই সেখানে পরীক্ষার দিনে যাতে তাকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়া হয় সেই কাতর আবেদনই রেখে গেল তানিয়া। এখন দেখার নিজেদের ভুল শুধরে পরীক্ষার নিয়ামক সংস্থা আদৌ তানিয়ার পাশে দাঁড়ায় কিনা।