eaibanglai
Homeদক্ষিণ বাংলাসাবধান দুর্গাপুরবাসী, ফুটপাতে নামী কোম্পানীর প্যাকেটেজাত খাবারে পোকা

সাবধান দুর্গাপুরবাসী, ফুটপাতে নামী কোম্পানীর প্যাকেটেজাত খাবারে পোকা

নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ সামনেই দীপাবলী। শুভ দীপাবলীর শুভেচ্ছা বিনিময়ের সঙ্গে সঙ্গে ড্রাই ফুডস আদান-প্রদানের রীতি বাঙালী ও অবাঙালীদের মধ্যে বহুদিন ধরেই প্রচলিত রয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই দীপাবলী, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শুকনো প্যাকেটজাত খাবার (কাজু, সল্টেড কাজু, খেজুর, পেস্তা, বাদাম, আখরোট, কিসমিস) ও মিষ্টি ভেট পাঠানোর তোড়জোড় চলছে জোরকদমে। তবে দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের জন্য প্যাকেটজাত ড্রাই ফুডস কেনার আগে সাবধান বাণী দিচ্ছে চ্যানেল এই বাংলায়। কারণ, দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তার পাশে ফুটপাতে ফলের দোকানে প্যাকেটজাত ড্রাই ফুডস কেনার আগে সাবধান হন। সম্প্রতি এই প্যাকেটজাত খাবার কিনেই ঠকেছেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা তথা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের সম্মানীয় এক ব্যক্তি। তার অভিযোগ, কয়েক দিন আগে দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারের ডিএমসি আবাসন ও ডক্টরস কলোনীর ঠিক উল্টো দিকের এক ফলের দোকান থেকে পেস্তার প্যাকেট কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়ি গিয়ে সেই প্যাকেট খুলতেই তিনি দেখেন প্যাকেটে ভেতরে পোকায় ভর্তি। প্রথমে তিনি প্যাকেটের গায়ে লেখা সংস্থার দেওয়া ফোন নং গুলিতে ফোন করে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু বহু চেষ্টা করার পর তিনি জানতে পারেন কোম্পানিটিই ভুয়ো। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেই প্যাকেটটি যে দোকান থেকে কিনেছিলেন সেই দোকানদারের কাছে নিয়ে আসেন। তাঁর অভিযোগ, দোকানদারের কাছ থেকে সহানুভূতি পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টে তার সাথে অশ্লীল ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন ওই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। শনিবার তাঁর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর চ্যানেল এই বাংলা-র তরফে অভিযুক্ত ওই দোকানদারের কাছে যাওয়া হয়। মুন্না নামে ওই দোকানদার আদতে বেনাচিতি ভিড়িঙ্গী এলাকার বাসিন্দা। তার কাছ থেকে ফুড লাইসেন্স, হকার লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্স সহ প্যাকেটজাত খাবার বিক্রির কাগজপত্র দেখাতে বলা হলেও তিনি কোনও কাগজ দেখাতে পারেননি। তিনি এও বলেন এই সমস্ত কাগজের কোনটিই তার কাছে নেই। তাকে প্রশ্ন করা হয় কিভাবে তিনি ওই জায়গায় দোকান চালাচ্ছেন, উত্তরে তিনি জানান, এলাকার স্থানীয় নেতৃত্বকে বলেই তার ফুটপাতে দোকান করার বন্দোবস্ত হয়েছে। তবে তার বদলে তাকে কী দিতে হয় তার উত্তরে তিনি চুপ করেই রইলেন। তবে ওই দোকানদার যার কাছ থেকে এই প্যাকেটজাত খাবার কেনেন তিনি দুর্গাপুরের বেনাচিতি গুরুদুয়ারার বাসিন্দা। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার সাফাই, কোম্পানির তরফে সাপ্লাই করা প্যাকেটের মধ্যে হয়তো কোনও একটা প্যাকেটে পোকা পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে যাতে এরকম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, আর কতদিন দুর্গাপুরবাসী এইভাবে খাবার কিনে প্রতারিত হবেন। জনগণের সমর্থনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের এলাকা সম্পর্কে ওয়াকিবহল নন, এবং এলাকার আনাচে-কানাচে কোথায় কী হচ্ছে তার কোনও তথ্যই যে আমাদের তাবড় তাবড় জনপ্রতিনিধিদের কাছে নেই তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই ঘটনা। তাহলে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের কাজটা কি ? দুর্গাপুর নগর নিগমের তথাকথিত খাদ্য দফতর ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরাও কী তাহলে শীতঘুমে ? ভাগাড়কান্ডের মতো কোনও বড় ঘটনা হলে তবেই তারা খোলস ছেড়ে বাইরে বেরোন। সাধারণ মানুষ তাদের কষ্টের রোজগারের টাকায় খাবার কিনে ঠকলেন নাকি অসুস্থ হলেন সেদিকে নজর দেওয়ার সময় তাদের নেই। থাকার কথাও নয়, কারণ কথায় আছে চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। সেটাই তো অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন তারা। তাই চ্যানেল এই বাংলায় এর পক্ষ থেকে সমস্ত দুর্গাপুরবাসীকে সাবধান করা হচ্ছে তারা যেন যেকোনো প্যাকেটজাত খাদ্যসামগ্রী ভালো জায়গা থেকে কেনেন এবং সেই জিনিসের রসিদ বা ক্যাশ মেমো অবশ্যই সংগ্রহ করবেন। কারণ আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার দায়িত্ব আপনাদেরই। যদি কোনও খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে গুণগত মান খারাপ থাকে তাহলে সেই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর রাস্তা থাকবে সেই জিনিসে রশিদ বা ক্যাশমেমো থাকলে। দুর্গাপুরবাসীকে অনুরোধ বিশেষ করে রাস্তার ধারে ফুটপাত থেকে খাবার জাতীয় কোনও জিনিস কেনার আগে ১০০ বার ভালো করে ভেবে নিন। আপনার কস্টার্জিত টাকার বদলে আপনি বিষ কিনছেন না তো?

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments