নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ শুভ দীপাবলী তথা আলোর উৎসবে মেতে গোটা দেশ। সেই দীপাবলীর ঠিক আগেই আসে ধনতেরাস উৎসব। ধনতেরাস উৎসব মানে আমরা মূলত বুঝি, সেই বিশেষ তিথিতে সোনা, রূপো, কাসা, পেতলের বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা। মূলত মাড়োয়ারি তথা ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই ধনতেরাসের তাৎপর্য বেশী মনে হলেও বর্তমানে সময় বদলেছে, বদলেছে উৎসব উদযাপনের ধরণও। এখন বাঙালিদের মধ্যেও ধনতেরাস বয়ে নিয়ে আসে এক উৎসবের আমেজ। অন্তত রবিবার এবছরের দুর্গাপুরের ছবি তা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিল। এই বছরের মতো ধনতেরাসের কেনা-কাটা আগে কখনও বোধহয় দুর্গাপুর দেখে নি। রবিবার গোটা দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখে বোঝার উপায় ছিল না একি ধনতেরাসের ভিড় নাকি দুর্গাপুজো। কেনাকাটার হিড়িক দেখে কে বলবে এই দুর্গাপুর শহর এখনও পিছিয়ে আর্থিক দিক থেকে? কে বলবে নোটবন্দি বা জিএসটি আসার পরে মানুষের কেনাকাটা কিংবা শখ-আহ্লাদে ভাটা পড়েছে? আসলে আবেগের কাছে কোনও বাধাই বাধা থাকে না। আর তাই দেখালো দুর্গাপুর। সন্ধ্যে ৮টা বাজতে না বাজতেই বিভিন্ন সোনার দোকানে ৫ গ্রাম ও ১০ গ্রাম সোনা ও রুপোর কয়েনের স্টক শেষ। এমনকি দুর্গাপুরের সিটিসেন্টারের এক নামী স্বর্ণবিপনী সংস্থার তরফে জানানো হল তাদের কাছে ২৫, ৫০ ও ১০০ গ্রাম ওজনের সোনা ও রূপোর কয়েনও প্রায়ই শেষের মুখে। তখন রাত মাত্র ৮টা। শুধু তাই নয়, কাসা, পেতলের বাসনপত্রের দোকানে তখন তিল ধারণের জায়গা নেই। এরকম ছবি আগে বোধহয় দেখেনি দুর্গাপুর। ভাবতে পারেন ধনতেরাসের দিন অর্থাৎ রবিবার দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে ২০ টাকার ঝাড়ু বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়! তাও রাতের দিকে বেশির ভাগ দোকানেই ঝাড়ুর স্টকও শেষ হয়ে গেছে। কলকাতা, মুম্বাই-এর মতো বড় বড় শহরে ধনতেরাস উদযাপনের হিড়িক আকাশ ছোঁয়া হলেও দুর্গাপুরের মতো উন্নয়নমুখী শহরও যে তাদের থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই তা বোধহয় আর আলাদা করে বলে দিতে হয় না।