eaibanglai
Homeএই বাংলায়শিল্পশহরে অটো ও টোটো চালকদের লাগামছাড়া দৌরাত্ম্য, শেষ কোথায়?

শিল্পশহরে অটো ও টোটো চালকদের লাগামছাড়া দৌরাত্ম্য, শেষ কোথায়?

নিউজ ডেস্ক, এই বাংলায়ঃ আবারও খবরের শিরোনামে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে টোটো ও অটো। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, সেই লাগামছাড়া দৌরাত্ম্য আর গা-জোয়ারি মনোভাবের কারণেই ফের একবার খবরের শিরোনামে শহরের টোটো এবং অটো চালকেরা। দিনের পর দিন যেভাবে এদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে তাতে খুব শীঘ্রই টোটো ও অটো চালকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বা তার থেকেও বড় কিছু ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। প্রত্যেকদিন শহরের আনাচে কানাচে চোখ ফেরালেই নজরে পড়বে টোটো ও অটো চালকদের সঙ্গে যাত্রীদের বাকবিতণ্ডার ছবি। হয় ভাড়া নিয়ে না হলে রুট নিয়ে, এই ছবি এখনও নিত্যদিনের। শহরবাসীর অভিযোগ, শিল্পশহরে এইমুহূর্তে হাজার খানেক টোটো ও সিএনজি অটো চলছে। প্রশাসনিক তরফে তাদের জন্য নির্দিস্ট রুটও করে দিয়েছে পুরসভা, কিন্তু তাসত্ত্বেও দিনের পর দিন রুট নিয়ে অশান্তি লেগেই রয়েছে। কোনও দরকারী কাজ হোক, অফিস হোক, ডাক্তার কিংবা হাসপাতালের যাওয়ার পথেই হোক কখনও না কখনও হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছেই শহরবাসীকে। কিন্তু উপায় না থাকায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই সেই টোটো এবং অটোতে চেপেই যাতায়াত করছেন। তবে এতো গেল শুধু রুটের সমস্যা। এবার আসা যাক অটো এবং টোটোর ভাড়া। শুনতে অবাক লাগলেও দুর্গাপুরে এই মুহূর্তে আবহাওয়া বিশেষে ভাড়া ঠিক করেন শহরের অটো ও টোটো চালকেরা। বিষয়টা একটু খোলসা করে বলা যাক। এই দিনকয়েক আগেই ব্যক্তিগত প্রয়োজনে দুর্গাপুরের সিটিসেন্টার বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাত বিকেল নাগাদ শুরু হল কালবৈশাখীর ঝড় ও বৃষ্টি। যে যার মত বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার দাপট থেকে বাঁচতে শেডের তলায় ছুটলেন। সেইমতো আমিও ছুটলাম। কোনওরকমে ঠাঁই হল সিটিসেন্টার থেকে বিধাননগর যাওয়ার জন্য অটো ও টোটো স্ট্যান্ডের এক অস্থায়ী ছাউনিতে। দেখলাম, একজন যাত্রী আড়া গ্রাম যাওয়ার জন্য অটোর খোঁজে ছুটে এলেন। সেই মুহূর্তে ওই রুটের অটোও সেখানে ছিল। কিন্তু অটো চালক ওই যাত্রীকে সাফ জানিয়ে দিলেন, রুটের গাড়ি যাবে না, যেতে হলে রিজার্ভ করে যেতে হবে। অবাক কান্ড ! সাধারণ দিনে সকাল থেকে শুরু করে বিকেল ৬টা পর্যন্ত সিটিসেন্টার থেকে বিধাননগর এলাকায় টোটো ও অটোর নিজস্ব রুট থাকলেও কোনও দিন ঝড়-বৃষ্টি বা বাস ধর্মঘটের মত কোনও ঘটনা ঘটলেই পোয়া বারো হয়ে যায় তাদের। যাত্রীদের বারবার অনুরোধ সত্বেও ১০০ টাকা বা ১৫০ টাকা হাঁকিয়ে টোটো রিজার্ভ করার নির্দেশ আসে এই চালকদের কাছ থেকে। শুধু তাই নয়, রাত ৮টা বাজলেই দুর্গাপুর স্টেশন চত্বর দখলে চলে যায় টোটো-অটো চালকদের। রাত বাড়তে থাকলে যত রুটের মিনিবাস কমতে থাকে ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে এদের দৌরাত্ম্য। কোনও যাত্রী তার গন্তব্যস্থল জানানোর আগেই অটো বা টোটো চালকদের প্রশ্নের পর প্রশ্নে জেরবার হতে হয় বলেো অভিযোগ জানাচ্ছেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, একেই রাতের দিকে কয়েক গুণ ভাড়া হাঁকিয়ে যাত্রীদের একপ্রকার লুট করে তারা, তার ওপর ভাড়া কমানোর দাবি জানালে অশ্লীল সব বাক্যের জেরে মহিলা যাত্রীদের চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলেও বেশ কিছু যাত্রীর অভিযোগ। কিন্তু একপ্রকার উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে এইভাবেই দিনের পর দিন শিল্পশহরের বাসিন্দাদের যাওয়া আসা করতে হচ্ছে। তারা দাবি জানিয়েছেন, প্রশাসনই যখন নিয়ম করে অটো এবং টোটোর রুট ও ভাড়ার তালিকা ঠিক করে দিয়েছে তাহলে তাদের এইধরনের আচরণের প্রতি নজর দেওয়া প্রশাসনেরই দায়িত্ব, তা নাহলে এহেন চালকদের অভব্য আচরণ থেকে রেহাই মিলবে না শহরবাসীর।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments