এই বাংলায় ওয়েব ডেস্কঃ- বলিউডে নক্ষত্র পতন, লড়াই শেষ, প্রয়াত ধর্মেন্দ্র। মৃত্যু কালে বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। মাঝে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ছড়িয়েছিল ভুয়ো মৃত্যুর খবর। যা খারিজ করে পরিবার। পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পান তিনি। বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সোমবার, ২৪শে নভেম্বর না-ফেরার দেশে চলে গেলন বলিউডের ‘হি-ম্যান’।
পুরো নাম ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার লুধিয়ানাতে (পাঞ্জাব) এক জাঠ পরিবারে জন্ম ধর্মেন্দ্রর। বাবা ছিলেন স্কুলের হেডমাস্টার। ১৯৫৮ সালে ফিল্মফেয়ারের ট্যালেন্ট হান্ট কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র। এই ট্যালেন্ট হান্টের হাত ধরেই লুধিয়ানার যুবকের মায়ানগরী মুম্বইতে পৌঁছে যান এবং বাকিটা ইতিহাস। লুধিয়ানার গ্রামের এক যুবক হয়ে ওঠেন বলিউডের এক নক্ষত্র।
বিমল রায়ের ‘বন্দিনী’ ছবিতে প্রথম কাজ করার সুযোগ পান কৃষণ দেওল। তবে বলিউডে তাঁর ডেবিউ সিনেমা “দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে” সাল ১৯৬০। যদিও এই ছবি বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি। পরবর্তীতে শোলা অউর শবনম (১৯৬১) ছবিটি সাফল্যের মুখ দেখে। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ১৯৬৬ সালে ‘ফুল ও পাথ্থর’ ছবিতে অ্যাকশ হিরোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে তিনি বলিউডের এক নম্বর ‘অ্যাকশন হিরো’ হয়ে ওঠেন। এরপর বক্স অফিসে একে পর এক সাফল্য। জীবন মৃত্যু, ইয়াদো কি বারাত, চারাস, চুপকে চুপকে, সীতা অউর গীতা, শোলে, দোস্ত, আজাদ, ডি বার্নিং ট্রেন সহ অগুণিত ছবি। ভারতীয় সিনেমার মোড় ঘোরানো কালজয়ী ছবি ‘শোলে’ তে অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র অভিনীত ‘জয়-বীরু’ জুটি আজও অমর হয়ে রয়েছে। শেষ জীবন পর্যন্ত অভিনয় করে গেছেন বলিউডের এই কিংবদন্তি এই অভিনেতা। ৮৭ বছর বয়সে করণ জোহর পরিচালিত ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ ছবিতে অভিনয় করে সকলের নজর কেড়েছিলেন। তাঁকে শেষবার পর্দায় দেখা যাবে শ্রীরাম রাঘবনের ‘ইক্কিস’ ছবিতে। আগামী ২৫শে ডিসেম্বর মুক্তি পাবে ছবিটি।
তবে ব্যক্তিগত জীবন ফিল্মোগ্রাফির মতো অতো সরল ছিল না। ছিল চড়াই উতরাইয়ে ভরা। অভিনয় জগতে আসার আগেই মাত্র ১৯ বছর বয়ে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল কৃষণ দেওল ওরফে ধর্মেন্দ্রর। স্ত্রী প্রকাশ কৌরের সঙ্গে তাঁর চার সন্তান। পরে অভিনয় করতে করতে বলিউডের ড্রিম গার্ল হেমা মালিনীর সঙ্গে প্রেম ও বিয়ে। হেমা ও ধর্মেন্দ্রর দুই কন্যা- এষা ও অহনা। তবে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেননি ধর্মেন্দ্র।
রাজনীতির ময়দান থেকেও দূরে থাকেননি বলিউডের হি-ম্যান। ২০০৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির টিকিটে রাজস্থানের বিকানের থেকে নির্বাচনে জেতেন। অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন অনেক সম্মান। তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মানেও ভূষিত করা হয়। অ্যাকশন হিরোর পাশাপাশি বলিউডের সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ হিসেবেও চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন শোলের বীরু। তাঁর চলে যাওযা বলিউডে এক গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করল।


















