নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুর: এবার দিলীপ ঘোষের মর্নিং ওয়াক কালচারে হেঁটে তাকে বধ করার খেলায় নামলেন কীর্তি আজাদ। নেমেই ছক্কা হাঁকালেন প্রাক্তন এই জাতীয় দলের ক্রিকেটার। শনিবার, ইস্পাতনগরীর মেজর পার্কে।
“আমার কাছে অনেক তথ্য আছে, ওর দলের লোকরাই ওকে এখানে হারাবে, বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে ‘টিম শুভেন্দু অধিকারী’ ই হারাবে দিলীপ ঘোষকে,” বলে দাবি কীর্তির।
এদিন প্রাতঃভ্রমনে এসে দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে এই বিস্ফোরক মন্তব্য বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের। ‘টিম শুভেন্দু অধিকারী’ হারিয়ে দেবে বর্ধমান দূর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষকে, অনেক তথ্য আছে তার কাছে সব সময় মতো মুখ খুলবেন, আর সেটা বুঝতে পেরেই নাকি দিলীপ ঘোষ সাত সমুদ্র পার করে আন্দামান চলে গেছেন, বলে মেজর পার্কে প্রাতঃভ্রমনে মন্তব্য ভোটপ্রার্থী কীর্তি আজাদের। দলের জেলা সভাপতি তথা পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে পাশে নিয়ে এই বিস্ফোরক মন্তব্য ক্রিকেটার কীর্তির। আজ সকালে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের স্টাইলেই মেজর পার্কে প্রাতঃভ্রমনে বেরোন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। কথা বললেন প্রাতঃভ্রমণকারীদের সাথে, দিলীপ ঘোষের স্টাইলেই ফুটবল খেললেন পার্কে আসা খুদেদের সাথে। তুললেন ছবি, শুনলেন এক আদিবাসী প্রাতঃভ্রমণকারির গান। আর সেখানেই নিজের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে এইসব বিস্ফোরক মন্তব্য বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের।
দুর্গাপুর বর্ধমান লোকসভার এই দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চল থেকেই ৭৬ হাজারের লিড নিয়ে ২০১৯ এ বিজয়ী হয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। আবার,২০২১ র বিধানসভা ভোটে বিজেপি নেতা লক্ষ্মণ ঘড়ুই জিতে বিধায়কও হয়েছেন। সেই বিজেপির গড়ে দাঁড়িয়ে কীর্তির এমন দাবিতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত শিল্পাঞ্চলে। যদিও, বিষয়টিকে আমল দিতে রাজি হয়নি বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির যুক্তি, “যাকে প্রচারে গিয়ে দলের অন্তরদ্বন্দ্বে পালিয়ে গিয়ে মন্দিরে আশ্রয় নিতে হয় তার মুখে দিলীপ ঘোষ বা বিজেপি সম্পর্কে কোনো কথা মানায় না।” এদিনই দলের নির্দেশে আন্দামানে প্রচারে গেছেন দিলীপ ঘোষ। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, “আমি দীর্ঘদিন আন্দামানে স্বয়ংসেবক হিসেবে কাজ করেছি। তাই, দল এখন ভোটের প্রচারে এখানে পাঠালো।” দিলীপের নিজের কেন্দ্র ছেড়ে আন্দামানে গমনকেও কটাক্ষ করে কীর্তি বলেন, “উনি বুঝতেই পারছেন না যে তার দলই ভোটের আগেই ওকে প্যাক আপ করে দ্বীপে নির্বাসন দিলো!”
এদিকে, বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, রবিবারই আন্দামানের দলীয় কর্মসূচি সেরে সরাসরি দুর্গাপুরেই ফিরছেন দিলীপ। সোমবার প্রাতভ্রমনে কীর্তির খোঁচার জবাব তিনি দিতে পারেন, বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষের পর কীর্তি আজাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকলেন শুভেন্দু অধিকারির আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী। তাঁর মক্কল শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বেফাঁস মন্তব্য করার জন্য। শনিবার প্রাতভ্রমণে বেরিয়ে কীর্তি বলেন ” শুভেন্দু অধিকারি ও তাঁর দলবল দিলীপ ঘোষকে হারিয়ে দেবে।”
একটি বিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গেছে, কীর্তি আজাদ খুব একটা ভুল বলেননি। দলের মধ্যে কেউ অন্তর্ঘাত করতে পারে। এই আশাঙ্কা আছে দিলীপের। তাই নিজেই নিজের ভোট মেশিনারি ঠিক করেছেন দিলীপ। মেদিনীপুর থেকে বিশ্বস্ত আটটি ছেলেকে নিয়ে এসেছেন তিনি। দুটো গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করছে ওই ছেলেরা বলে জানা গেছে। একটা বিধানসভা ভিত্তিক। আর একটা লোকসভা ভিত্তিক। নিজের দলের মধ্যেই কেউ কি অন্তরঘাত করতে পারে সেই আশঙ্কায় দিলিপের এই ব্যবস্থা? কোন এলাকার মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং কেন এসব সার্ভে করছে স্পেশাল টীম দিলিপের।