সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– সেলফি তুলতে গিয়ে দামোদরে তলিয়ে গেলেন একই পরিবারের তিনজন। বরাত জোরে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন পরিবারের এক মহিলা ও তার শিশু সন্তান। ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের কুলটির ডিসেরগড় মাজার শরীফের কাছে দামোদর ঘাটে।
গত মঙ্গলবার কলকাতার খিদিরপুরের ইকবালপুর থানার ১৯, বি হোসেন শাহ রোডের বাসিন্দা নাসিমা বেগম তার স্বামী মহঃ ফিরোজ ওরফে কাজু (৪৮ ), ছেলে মহঃ আসিফ (২৪ ), মহঃ তৌসিফ (১৯ ) ও এক শিশু সন্তানকে নিয়ে কুলটির ডিসেরগড় মাজার শরীফে এসেছিলেন। এদিন বিকেলের পরে মাজার শরীফে যাওয়ার আগে পরিবারের সবাই মিলে দামোদর নদীতে স্নান করতে নামেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান ওই পরিবারের সকলে নদীতে স্নান করতে নেমে সেলফি তুলছিলেন। সেই সময় অসাবধানতাবশত একজন নদীতে তলিয়ে গেলে তাকে বাঁচাতে গিয়ে একে একে পরিবারের সকলে তলিয়ে যায়। বিষয়টি লক্ষ্য করে স্থানীয়রা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নাসিমা বেগম ও তার শিশু সন্তানকে উদ্ধার করলেও মহঃ ফিরোজ ও তার দুই ছেলের খোঁজ মেলেনি। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শাঁকতোড়িয়া থানার পুলিশ। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের উপস্থিতিতে বাবা ও দুই ছেলের খোঁজ চালালেও দামোদর নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় তখনকার মতো তল্লাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার সিভিল ডিফেন্স এবং এনডিআরএফ দল পৌঁছয় এবং তল্লাশি শুরু করে। রাতে মহঃ ফিরোজ ওরফে কাজুর দেহ উদ্ধার হয়। পরে বুধবার সকালে মহঃ তৌসিফের দেহ উদ্ধার হয়। বুধবার দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহ দুটির ময়নাতদন্ত হয়। তবে এদিন বিকেল পর্যন্ত নাসিমা বেগমের আরেক ছেলে মহঃ আসিফের খোঁজ মেলেনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বর্তমান সময়ে আট থেকে আশির একটা বড় অংশ মেতে উঠেছে সেলফির নেশায়। নদীর কিনারা বা পাহাড়ের বিপজ্জনক খাঁজে, চলন্ত ট্রেনে অথবা অন্য কোনোভাবে ঝুঁকি নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে ঘটে চলেছে একের পর এক দুর্ঘটনা। হচ্ছে মৃত্যুও। তবুও সর্বনাশা এই সেলফির নেশা থেকে হুঁশ ফিরছে না আম জনতার।