সংবাদদাতা, বর্ধমান: সেই ডিজের দাপট। পুজোর পর পিকনিকের মরশুমে দক্ষিন বঙ্গের জেলাগুলিতে বিকট শব্দের এই ডিজে বক্সের তাণ্ডব রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে এবার পুলিশকেও। কিন্তু, আশ্চর্যজনক ভাবে নীরব রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
পর্ষদের এক কর্তার কথায়, “অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।” ব্যাস, ওনাদের দায়িত্ব শেষ!
এই ডিজে নিয়েই শুক্রবার রাতে বর্ধমান ১নং ব্লকের কুড়মুন গ্রামে ভয়ংকরভাবে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকর্মীদের। তারপরেও এতটা উদাসীন কেনো প্রশাসন – এ প্রশ্নও উঠছে।
ওইদিন একটি দল পিকনিক থেকে ফিরে আসার সময় বর্ধমান নবদ্বীপ রুটে রাস্তার পাশে মাইক্রোফোন বসিয়ে যানবাহনের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে নাচানাচি শুরু করে। ঘটে যায় ধুন্ধুমার কাণ্ড। রাস্তা আটকে নাচানাচির খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বর্ধমানের দেওয়ানদিঘী থানার মোবাইল প্যাট্রোলিং ভ্যান। প্রথমে পিকনিক ফেরত যুবকদের ওই রাস্তার পাশ থেকে মিউজিক সিস্টেম সরাতে অনুরোধ করে পুলিশ। কিন্তু, পুলিশের আবেদনে সাড়া না দিয়ে তারা যথারীতি নাচানাচি চালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ জোর করে তাদের রাস্তা থেকে হঠাতে গেলে পুলিশকে আক্রমণ করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে ওই পিকনিক পার্টি। এই ঘটনায় কনস্টেবল গঙ্গা প্রসাদ চ্যাটার্জির কপালে ইঁট লাগে। তিনি গুরুতর আহত হন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে দেওয়ানদিঘী থানার ওসি বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপরই পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার রাত্রেই ডিএসপি ডিএ্যাণ্ডটি এর নেতৃত্বে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বাজেয়াপ্ত করা হয় চারটি ডিজে বক্স, ৪৫টি মাইক, একটি জেনারেটর এবং একটি ট্র্যাক্টর। অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে শনিবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃত রবীন রায়,সনাতন ধাড়া, চিরন রানা,চন্দন ধাড়া, সাগর রানা দেওয়ানদিঘী থানা এলাকার বাসিন্দা। কমল হালদার, সাধন রায় ও সনৎ বাগ মেমারি থানা এলাকার বাসিন্দা এবং বিজয় মাল তারকেশ্বর থানা এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, ডিজের তাণ্ডব সেই ২৫ ডিসেম্বরের সকাল থেকে এই ভরা পিকনিকের মরশুমে অতিষ্ঠ করে তুলেছে জেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকার জনজীবন। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার সায়ক দাস বলেন, “একটা স্পেসিফিক কেস হয়েছে। কিছু অ্যারেস্টও হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আরো বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।”