জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, উত্তর চব্বিশ পরগণাঃ- দুর্গাপুজোর নবমীর দিন সবাই যখন সেজেগুজে প্যাণ্ডেলে প্যাণ্ডেলে ঠাকুর দেখতে ব্যস্ত ও আনন্দে মত্ত তখন পুজোর প্যাণ্ডেলের সামনে সাপ ও বন্যপ্রাণী সচেতনতায় ব্যস্ত ছিল সদ্য কলেজের চৌকাঠে পা-রাখা উত্তর চব্বিশ পরগণার দত্তপুকুরের অদিতি গাইন। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে না দিয়ে ঐ ছোট্ট মেয়েটা তখনও নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে ছিল সচেতন।
নবমীর সন্ধ্যায় সাপ ও বন্যপ্রাণী নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য উত্তর চব্বিশ পরগণার দত্তপুকুরের মিতালি সংঘের সামনে রীতিমত স্টল করে বসে পড়ে সে। উচ্চস্বরে বেজে চলা মাইকের আওয়াজের মাঝেই চিৎকার করে প্যাণ্ডেলে আগত দর্শনার্থীদের সাপ ও বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করে গেছে। সাপ চেনার জন্য ব্যবহার করেছে কাপড়ের ব্যানারে আঁকা ছবি। কারণ প্রজেক্টর কেনার মত আর্থিক সামর্থ্য তার নাই। খুবই অসহায় লাগছিল মেয়েটিকে। তার কথা আমরা তুলে ধরি আমাদের সংবাদ মাধ্যমে।
আমাদের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখে বহু সহৃদয় মানুষ এগিয়ে আসে। বাড়িয়ে দেয় সাহায্যের হাত। অবশেষে সবার মিলিত সাহায্যে অদিতি কিনে ফেলে তার স্বপ্নের প্রজেক্টর। আনন্দে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে অদিতির।
অদিতির মা অর্পণা দেবী বললেন – নবমীর দিন থেকেই মেয়েকে খুব বিমর্ষ দেখতাম। সবাই যখন আনন্দ করছে ও তখন বিছানায় শুয়ে মোবাইলে কি সব দেখছে। শেষ পর্যন্ত ওর কাছ থেকেই প্রজেক্টরের কথা জানতে পারি। কিন্তু সেটা কিনে দেওয়ার মত আর্থিক সামর্থ্য আমাদের নাই। সংবাদ মাধ্যমে ওর খবর প্রকাশের পর থেকেই দেখতে পেলাম সহৃদয় মানুষরা ওকে আর্থিক সাহায্য করছে। মেয়েরও একটু একটু করে হাসি ফুটছে। অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হলো। যে সংবাদ মাধ্যম আমার অখ্যাত মেয়ের খবর তুলে ধরে তার স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করেছে মা হিসাবে তাদের প্রতি রইলো আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। আশাকরি আগামী দিনেও তারা আমার মেয়ের পাশে থাকবে।
অন্যদিকে আবেগঘন কণ্ঠে অদিতি বলল – আমি ভাবতেই পারিনি আমার আকুল আবেদন সংবাদ মাধ্যম তুলে ধরবে এবং সহৃদয় মানুষরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।