নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– বহু ভাষাভাষী, একাধিক ধর্ম ও নানান সংস্কৃতির দেশ আমাদের ভারতবর্ষ। তাই বৈচিত্রের মধ্যে একতাই আমাদের দেশের অন্যতম বৈশিষ্ট । আর বৈশিষ্টকে সামনে রেখেই ‘ভাষা অনেক, কিন্তু ভাব এক’ শীর্ষক এক কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুল।
প্রসঙ্গত জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-তে ভারতীয় ভাষাগুলিকে জাতীয় সংহতির জন্য একটি ‘উপকরণ’ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। যাতে দেশের শিক্ষার্থীরা ভারতীয় নানান এই ভাষার গুরুত্ব বোঝে এবং ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ গড়ে তুলতে পারে। ভাষা প্রত্যহিক জীবনের সঙ্গী। তাই দেশের মানুষকে বিশষ করে নতুন প্রজন্ম তথা শিক্ষার্থীদের মনের ভাব প্রকাশ তথা শুভেচ্ছা বিনিময়, অভিবাদন জানানোর জন্য দেশের ভাষার উপরই নির্ভর করা উচিত। তার জন্য মাতৃভাষা ছাড়াও দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষাগুলিও শেখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে জাতীয় শিক্ষা নীতিতে। এর ফলে দেশবাসীর মধ্যে আত্মীয়তার অনুভূতি জাগ্রত হবে যা জাতীয় ঐক্য তথা সংহতির ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
আর এই ভাবনাকে মাথায় রেখেই ১১ ডিসেম্বর জাতীয় কবি সুব্রাহ্মনিয়ামের জন্মবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বা সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন ‘ভারতীয় ভাষা উৎসব’ উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই অঙ্গ হিসাবে সোমবার ডিএভি মডেল স্কুলে ‘ভাষা অনেক, ভাব এক’ শীর্ষক এক কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। যাতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিপুল উৎসাহ, আনন্দের সাথে অংশগ্রহণ করেছিল। প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা ভারতের সংবিধান দ্বারা অনুমোদিত ২২টির মধ্যে ৭টি ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করে। এছাড়াও কবি সুব্রাহ্মণীয়ম রচিত কবিতা তামিল ও হিন্দিতে পাঠ করা হয়।
স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, এই কবিতা-আবৃত্তি প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য ছিল সমস্ত ভারতীয় ভাষার প্রতি পড়ুয়াদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করা এবং সেগুলির মধ্যে থাকা আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া ও সর্বোপরি সাহিত্যের প্রতি পড়ুয়াদের সম্মান প্রদর্শন করতে শেখানো। এছাড়া ভাষা শেখা যে একটি মজাদার এবং আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হতে পারে সেই বার্তাই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া।
এদিনের প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠানে ডিএভি মডেল স্কুলের প্রিন্সিপাল পাপিয়া মুখার্জি ভারতীয় ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন যে, “ভাষা একটি যোগসূত্র হিসাবে কাজ করে। এটি বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের প্রতীক। আমাদের বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় স্বাক্ষর করা, শুভেচ্ছা জানানো এবং আনুষ্ঠানিক কথোপকথন করা উচিত। ভাষা পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও একতা বৃদ্ধিতে সাহায্য় করে।”
সব মিলিয়ে দেশের একাধিক ভাষা নিয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগীতা যেন ভাষা উৎসবের রূপ নিয়েছিল। যে উৎসবে অংশ নিয়ে রীতিমতো আনন্দে মেতে উঠেছিল দুর্গাপুর ডিএভি মডেল স্কুলের ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা।