নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- মহালয়ার আগমনী বার্তার মধ্যে দিয়ে শুরু গিয়েছে বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গোৎসবের কাউন্ট ডাউন। হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। এরপরই নতুন জামা, ঠাকুর দেখা, খাওয় দাওয়া, আড্ডায় আনন্দে মাতবে আপমর বাঙালি। তাই ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়ে পুজোর শেষ মহুর্তের প্রস্তুতি। দোকানে, মলে নতুন জামা জুতো কেনার ভিড় ক্রেতাদের। কিন্তু দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের চিত্রটা এবার একটু অন্যরকম। পুজো চলে এলেও সেভাবে ভিড় নেই কেনাকাটার। কারণ এই প্রথমবার দুর্গাপুজোতে বোনাস মিলবে না দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের।
প্রসঙ্গত দুর্গাপুর শিল্পনগরীর অর্থনীতির মেরুদন্ড হল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা। এই শিল্পনগরীর অর্থনৈতিক পরিকাঠামো অনেকটাই নির্ভর করে মূলতঃ এই কারখানার উপর আর পাশাপাশি রয়েছে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টও। স্বভাবতইঃ এই শহরের ব্যবসায়ীরাও এই কারখানাগুলির শ্রমিকদের উপরেও অনেকটাই নির্ভরশীল। দুর্গাপুজোর বোনাস পাওয়া মাত্রই এই শহরের বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমলগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে কেনাকাটার জন্য। এবারের চিত্রটা একেবারে অন্যরকম। এবার দুর্গাপুজো নয় বরং দিওয়ালিতে বোনাস পাবেন ইস্পাত কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা। কৃতৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শ্রমিক কর্মচারী মহলে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরই পুজোর বোনাস কত হবে তা নিয়ে এই কারখানার শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা দিল্লি যান কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তা স্থির করতে। আর তারপরেই পুজোর ঠিক আগে শ্রমিকদের বোনাস পৌঁছে যায় তাদের স্যালারি অ্যাকাউন্টে। এ বছরও অন্যান্যবারের মতোই দিল্লিতে কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রমিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। কিন্তু অবাক করা ঘটনা সেই বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় পরবর্তী বৈঠকের দিন স্থির করা হয়েছে অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে। অর্থাৎ দুর্গাপুজা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। প্রসঙ্গত দুর্গাপুজোর বোনাস বরাবরই দুর্গাপুজাতেই দেওয়া হয় আসছে। শ্রমিক মহলের একাংশের অভিযোগ এটি আসলে কর্তৃপক্ষ তথা কেন্দ্রের ষড়যন্ত্র। কেন্দ্র সরকার বাঙালি সংস্কৃতিকে প্রাধান্য না দিয়ে অবাঙালি সংস্কৃতিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই রাজ্যের সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজাকে গুরুত্ব না দিয়ে দিওয়ালিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।