নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– দিন দুই আগে দুর্গাপুরে বিহারের বাসিন্দা যুবকের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশি তদন্তে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে নিজের দাদাকে নিয়ে ওই যুবককে খুনের অভিযোগে দুর্গাপুরের ধান্ডাবাগের এক বিবাহিত তরুণীকে গ্রেফতার করল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। শনিবার তাকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। অন্যদিকে এদিন মালদা থেকে প্রেমিকার দাদাকে মালদা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের ফরিদপুর বাউরী পাড়ার বাসিন্দা গৌতম সাহার বাড়ি থেকে বিহারের শাহরানপুরের বাসিন্দা বছর ২৫-এর ছোটন দুবের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাড়ি মালিক জানান গত সোমবার গান্ধীমোড়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার আত্মীয় ভর্তি রয়েছে সেই কথা জানিয়ে ঘর ভাড়া নিয়েছিল ওই যুবক। এরপর ওই ঘরে বাইরে থেকে তালা বন্ধ থাকলেও দুর্গন্ধ বেরোতে থাকায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। দুর্গাপুর থানার পুলিশ তালা ভেঙে ঘরের ভেতর থেকে যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। ঘর বাইরে থেকে বন্ধ থাকায় সন্দেহ হয় পুলিশের। তদন্তে নেমে মৃত ছোটন দুবের মোবাইলের কললিষ্ট পরীক্ষা করতেই বেরিয়ে আসে দুর্গাপুর থানা এলাকার ধান্ডাবাগ বাগানপাড়ার বাসিন্দা কিশোর পান্ডের স্ত্রী পুজা পান্ডের মোবাইল নাম্বার। সেই সুত্র ধরেই পুলিশ পূজাকে তার বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পুলিশের দাবি জিজ্ঞাসাবাদে পূজা স্বীকার করে নেয় তার দাদা মিত্তিন পান্ডের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ছোটনকে খুন করেছেন। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে পূজার সঙ্গে ছোটনের বছর দুয়েক ধরে বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল পূজা। কিন্তু পূজার অভিযোগ ছোটনের মোবাইলে পূজার কিছু আপত্তিকর ছবি ছিল, সেই ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য চাপ দিচ্ছিল ছোটন। এরই মধ্যে পূজার বাড়িতে আসে রাজস্থানে একটি হোটেলে কাজ করা পূজার দাদা মিত্তিন পাণ্ডে। দুজনে মিলে ছোটনকে খুনের পরিকল্পনা করে ছোটনকে দুর্গাপুরে ডেকে পাঠায়। এরপর গত মঙ্গলবার মিত্তিন ও পূজা রাতের অন্ধকারে ফরিদপুরে ওই ভাড়া বাড়িতে ছোটনের কাছে যায় এবং ছোটনকে প্রচুর মদ খাইয়ে তার গলা টিপে খুন করে। এরপর ছোটনের মোবাইল ফোন, আধার কার্ড সহ কিছু নথিপত্র নিয়ে মিত্তিন এবং পূজা ওই ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে ধান্ডাবাগের ঘরে ফিরে যায়। এরপর গত বৃহস্পতিবার ছোটনের দেহ উদ্ধারের পর পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার বোনের বাড়ি থেকে চম্পট দেয় মিত্তিন। যদিও শনিবারই মালদা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দুর্গাপুরে নিয়ে আসে পুলিশ।