eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুর ইসকনের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় শিল্পাঞ্চল জুড়ে

দুর্গাপুর ইসকনের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় শিল্পাঞ্চল জুড়ে

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃঅমোঘ লীলা প্রভুর পর এবার বিতর্কে জড়াল দুর্গাপুর ইসকন। কিছুদিন আগেই সামাজিক মাধ্যমে ইসকনের এক সন্ন্যাসী পরম পূজনীয় শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব ও স্বামী বিবেকানন্দের নামে কুরুচিকর মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন। তার ওই মন্ত্য়ব্যের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল সাধারণ থেকে বুদ্ধিজীবী মানুষ। সংবাদ মাধ্যম থেকে সামাজিক মাধ্যমে উঠেছিল প্রতিবাদের ঝড়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইসকন কর্তৃপক্ষ রীতিমতো নোটিশ জারি করে ওই সন্ন্যাসীকে এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যদিও তাতেও প্রতিবাদের ঝড় থামানো যায়নি। অবশেষে একটি ভিডিও প্রকাশিত করে তার বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চান ইসকনের ওই সন্ন্যাসী।

সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই দুর্গাপুর ইসকন শাখার ভূমিকা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। ঘটনার সূত্রপাত সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও নিয়ে। যেখানে দেখা যাচ্ছে এক পূর্ণবয়স্ক হনুমান দুর্গাপুর ইসকন মন্দিরের রাধামাধবজী মূর্তির সামনে অন্যান্য সাধারণ ভক্তবৃন্দদের পাশে শান্ত হয়ে বসে আছে এবং ইসকনের ওই সময় উপস্থিত সাধুরা লাঠির আঘাত করে হনুমানটিকে মন্দিরের বাইরে তেড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘এই বাংলায় ওয়েব পোর্টাল’, তবে গত রাত থেকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে শিল্পাঞ্চলবাসীর মনে।

উল্লেখ্য কয়েক বছর আগে রথযাত্রা উপলক্ষে স্থানীয় সিটিসেন্টার চতুরঙ্গ ময়দানে এক ধর্মালোচনার সময় যখন দুর্গাপুর ইসকন মন্দিরের কর্ণধার বক্তব্য রাখছিলেন তখন হঠাৎই এক হনুমান এসে তার পাশে দীর্ঘক্ষন বসে সেই ধর্মালোচনা শুনেছিল। সেই ভিডিওটিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল এবং দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের শত শত মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছিলেন ইসকন মন্দিরের কর্ণধারকে, তার জীব প্রেমের জন্য। সেই দিনও ‘এই বাংলায় ওয়েব পোর্টালে’র পক্ষ থেকে ওই সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছিল এবং শত শত শিল্পাঞ্চলের মানুষ প্রাণভরা ভালোবাসা জানিয়েছিলেন ইসকনের সাধুদেরকে, অবলা জীবকে এভাবে ভালোবাসা দান করার জন্য। কিন্তু হঠাৎই কয়েক বছর পরে গতকাল যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তা অন্য কথা বলছে বলে মনে করছেন শিল্পাঞ্চলের সাধারণ বাসিন্দারা। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা এই ভাইরাল ভিডিও দেখে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের এক সমাজসেবী দেবজিৎ রায় এদিন আক্ষেপ করে বলেন, “দুর্গাপুর ইসকন মন্দিরের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এই ভিডিওতে যে অবলা হনুমানটিকে লাঠির আঘাত করে মন্দির থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। ভগবানের মন্দিরে সকল জীবের প্রবেশের অধিকার রয়েছে। সেখানে একটা হনুমান যদি শান্ত হয়ে ভগবান দর্শন ও ধর্মালোচনা শুনতে আসে তাহলে তাকে কেন ইসকনের সাধুরা লাঠির আঘাত করে মন্দির থেকে তেড়ে বার করে দিলেন? ইসকনের সাধুদের এহেন আচরণ কি ধর্ম আচরণের অঙ্গ, নাকি নিছক ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে চলে এই সংগঠন? মুখে হরিনাম আর পেছনে ছুরি? এই ভাইরাল ভিডিও দেখে এখন এই প্রবাদটি সঠিক বলে মনে হচ্ছে। দুর্গাপুর ইসকন মন্দিরের সাধুরা গোমাতা সেবা করার নামে বিভিন্ন ভক্তদের কাছ থেকে মোটা অংকের দান গ্রহণ করেন, তাহলে কেন একটা হনুমানকে বাধা দেওয়া হল ও লাঠির ঘায়ে মন্দির থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল? এর কি কোন উত্তর রয়েছে ইসকনের সাধুদের কাছে? গেরুয়া বসন পড়ে মুখে হরিনাম আওড়ালেও আসলে তারা কতটা জীবে প্রেম করতে শিখেছেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ভাইরাল ভিডিওটি সামনে আসার পর থেকে।”

শিল্পাঞ্চলের একাধিক গুণী মানুষজনরা অভিযোগের সুরে বলছেন, “হরিনাম প্রচার করা ইসকন মন্দিরের সাধুদের আসল চরিত্র এই ভাইরাল ভিডিওতে প্রকাশ পেয়েছে। প্রসঙ্গত হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে হনুমানকে ভগবান রূপে পুজো করা হয়ে থাকে সারা বিশ্বে তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে। একাধিক হনুমান মন্দিরে নিত্যদিন চলে পূজা অর্চনা। আর সেই অবলা হনুমানকে এহেন লাঠির আঘাতে মন্দির থেকে বিতাড়িত করায় ইসকনের সাধুদের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়েছেন দুর্গাপুরের সুশীল সমাজের বাসিন্দারা। এমনকি আগামী দিনে দুর্গাপুর ইসকন মন্দিরের সমস্ত ধর্ম আচরণ ও অনুষ্ঠান বয়কট করার ডাক দিয়েছেন শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দাদের একাংশ।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments