নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ– এবার ইডির র্যাডারে দুর্গাপুর পৌরসভা। চাওয়া হল নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য। যার জেরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে দুর্গাপুর পৌরসভার অন্দরে। এবার রাজ্যের পৌরসভা নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ঢুকে গেল দুর্গাপুর পৌরসভার নামও। যদিও দুর্গাপুর পৌরসভার নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও রকম দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান পুরপ্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্য়ায়।
জানা গেছে আরবান ডেভলপমেন্ট এন্ড মিউনিসিপাল অ্যাফেয়ার্সের কাছে দুর্গাপুর পৌরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। ইতিমধ্যেই সেই তথ্য তদন্তকারী সংস্থাটির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর ২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ এর ১ জুন পর্যন্ত দুর্গাপুর পৌরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। এরপরই আরবান ডেভলপমেন্ট এন্ড মিউনিসিপাল অ্যাফেয়ার্স বা ইউডিএমএ দুর্গাপুর পৌরসভার কাছে ওই নির্দিষ্ট সময়ের নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে পাঠায়। ইতিমধ্যে ইউডিএমএ-কে ওই তথ্য় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে পুরপ্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্য়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে জানিয়েছেন,”পুরসভায় ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত যতগুলি নিয়োগ হয়েছে, তার তালিকা পুরসভার কাছে ছিল। সেই সব তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রাজ্যের অন্যান্য পৌরসভারগুলির নিয়োগের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুর পৌরসভার বিরুদ্ধে সে রকম কোনও অভিযোগ ওঠেনি” বলেও দাবি করেছেন পুরপ্রশাসক।
উল্লেখ্য, রাজ্যে স্কুল নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের মধ্যেই কার্যত কেঁচো খুঁড়তে কেউটের মতোই পুরসভায় নিয়োগেও দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে। গত ১৯ মার্চ কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি-র জালে ধরা পড়ে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ পেশায় প্রোমোটার অয়ন শীল। এরপর গত ২০ এবং ২১ মার্চ অয়ন শীলের চুঁচুড়ার বাড়ি ও সল্টলেকের অফিস ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। সেখান থেকে উদ্ধার হয় পুর নিয়োগের ওএমআর শিট। সেই তথ্য আদালতে পেশ করে ইডি। রিপোর্টে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি’র তদন্তকারীরা জানান, নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে ধৃত অয়ন শীলের সল্টলেকের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন নথি এবং পারিপার্শ্বিক প্রমাণ থেকে স্পষ্ট, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্র ছাড়াও রাজ্যের পৌরসভাগুলির নিয়োগের ক্ষেত্রেও বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে। আদালতে ইডি জানায়, প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, পৌরসভা নিয়োগ দুর্নীতির পরিমাণ ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছতে মামলার তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এবং ইডি’র জমা করা রিপোর্টে দেখেই এই মামলায় সিবিআই তদন্তে সম্মতি দেয় হাইকোর্ট। এরপরই জুনের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যের প্রায় ১৪টি পৌরসভায় একসাথে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান চালান সিবিআই ও কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি ।