নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– দুর্গাপুরে একই পরিবারের চারজনের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করল দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম বুলু মণ্ডল, প্রশান্ত নায়েক ওরফে গৌতম ও শিলা নায়েক। ধৃতদের সোমবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
প্রসঙ্গত রবিবার ভোরে দুর্গাপুরে কুরুরিয়া ডাঙার মিলনপল্লী এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে অমিত মণ্ডল, তার স্ত্রী, দশ বছরের ছেলে ও এক বছরের মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়রা প্রথমে অমিত মণ্ডল দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে ঘরের ভেতরে অমিত বাবুর স্ত্রী ও দুই সন্তানের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। অন্যদিকে মৃত্যুর আগে অমিত মণ্ডলের স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি ম্যাসেজ ঘিরে তোলপার পড়ে যায়। অমিত মণ্ডল মৃত্যুর আগে ওই ম্যাসেজ পরিবারের কয়েকজনের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন বলে দাবি। অভিযোগ ওই ম্যাসেজে অমিতবাবু তার মা ও মামা বাড়ির কয়েক জনের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের কথা জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি মামার বাড়ির বেশ কয়েকজন তাকে আর্থিকভাবে প্রতারিত করেও বলে নাকি ওই ম্যাসেজে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও অমিতবাবুর মাসতুতো বোন দাবি করেন রবিবার রাতে অমিত মণ্ডল ও তার পরিবারের সকলের সঙ্গে ওই বাড়িতেই ছিলেন তাদের মা। এছাড়াও অমিতবাবুর দেহ হাত বাঁধা অথচ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় ও ওই বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরাটিও কালো পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল বলে দাবি করেন তিনি। সব মিলিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করতে গেলে বাধা দেন তারা। এলাকাবাসী স্পষ্ট জানিয়ে দেয় দোষীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তারা দেহ সরাতে দেবেন না। পরে কমব্যাট ফোর্স ও বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অমিতবাবুর মা সহ এক আত্মীয়কে আটক করে পুলিশ।
পরে অমিতবাবুর স্ত্রী রূপা মণ্ডলের বাবা বিশ্বম্ভর পাল দুর্গাপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অমিত মণ্ডলের মা বুলু মণ্ডল, অমিত মণ্ডলের মাসতুতো ভাই গৌতম নায়েক ও মাসতুতো ভাইয়েক স্ত্রী শিলা নায়েককে গ্রেপ্তার করে। যদিও বিশ্বম্ভরবাবু এই ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।