নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ– শহরের দু’দুটি হাসপাতালের গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। মৃতার নাম দীপা ব্যানার্জি,বয়স ৫২ বছর। তিনি ডিএসপি স্টিল টাউনশিপের বাসিন্দা ছিলেন।
দীপাদেবীর ছেলে সৌরভ জানান ইউরিন ইনফেকশন জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তার মা। কালীপুজোর রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ডিএসপি মেন হসপিটালে ভর্তি করা হয়। মায়ের দেখভালের জন্য একজন অ্যাটেনডেন্টের ব্যবস্থা করে তারা বাড়ি ফিরে যান। পরদিন সকালে সেই অ্যাটেনডেন্ট তাদের ফোন করে জানান রোগীর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যান সৌরভ ও তার দিদি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তাদের মাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হচ্ছে এবং হাসপাতালের এক সিনিয়র চিকিৎসককে তার চিকিৎসাক দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। সৌরভের অভিযোগ তিনি সেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জানতে পারেন ওই চিকিৎসক অন্য কাজে ব্যস্ত রোগীকে দেখার তার সময় হয়নি। এরপর চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওই দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি ও তার দিদি। অবশেষে রাতে আইসিইউ-এর দায়িত্বে থাকা নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন ওই চিকিৎসক দুপুরের দিকে রোগীকে দেখে চলে গেছেন। এরপর হাসাপাতালে কর্মরত অন্য এক চিকিৎসকের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করলে তিনি দীপাদেবীকে পরীক্ষা করে জানান তার ব্লাড প্রেসেরা অস্বাভাবিকভাবে নেমে গেছে দ্রুত তাকে অন্যত্র স্থানান্তর করার পরামর্শ দেন তিনি। সেই মতো ওই দিন রাতেই তাকে সিটিসেন্টারের জাতীয় সড়ক সংলগ্ন একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন সৌরভ ও পরিবারের লোকজন। কিন্তু অভিযোগ সেখানেও গাফিলতি ও অবহেলার শিকার হন তারা। সেখানে জরুরি বিভাগে রোগীকে ভর্তি করে নেওয়া হলেও বেড নেই বলে সারা রাত তাকে সেখানেই রেখে দেওয়া হয় এবং সেই সম্পর্কিত অনুমতি পত্রে সই করিয়ে নেওয়া হয়। এদিকে পরদিন সকালেও জরুরি বিভাগ থেকে তাকে স্থানান্তর না করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হন সৌরভ ও তার পরিবারের লোকজন। অভিযোগ চাপে পড়ে ওই দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ দীপা দেবীকে আইসিইউ-তে স্থানান্তর করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
পুরো ঘটনায় দুই হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা ও কর্তব্যে গাফিলতি, অবহেলার অভিযোগ করেছেন মৃতা দীপা দেবীর ছেলে সৌরভ ও তার পরিবারের লোকজন। তাদের দাবি এই দুই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করুক পুলিশ প্রশাসন যাতে শহরের আর কোনো মানুষকে যেন এভাবে গাফিলতি ও অবহেলার শিকার হয়ে বেঘোরে প্রাণ দিতে না হয়। অসময়ে হারাতে না হয় আপনজনকে।