নীহারিকা মুখার্জ্জী,দুর্গাপুরঃ- যত দিন যাচ্ছে, যত আমরা আধুনিকতার নামাবলী গায়ে জড়াচ্ছি তত ভুলে যাচ্ছি শিকড়কে। যাদের হাত ধরে দেশ তথা বিশ্বের দরবারে আমাদের পরিচিতি তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি অবজ্ঞার আস্তাকুঁড়েতে। বিশেষ দিন ছাড়া তাদের গুরুত্ব থাকছেনা, বিপদে পড়লে স্মরণ করি, প্রয়োজন ছাড়া মনে রাখিনা। এরকম একজন মনীষী হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যিনি নিজেই একজন প্রতিষ্ঠান, বাঙালির অস্তিত্ব, একান্ত নিজের মানুষ ও গৌরব। এবার ভুলতে থাকা এই মানুষটিকে দুর্গাপুরের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিল ‘আন্তরিক’ সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠী।
৯ ই মে কবিগুরুর ১৬৩ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ‘ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ’ নামক একটি অভিনব কর্মসূচি গ্রহণ করল সংশ্লিষ্ট পত্রিকা গোষ্ঠী। স্থানীয় মানুষের উপস্থিতিতে এবং রবীন্দ্রনাথের লেখা গান, কবিতা পাঠের মধ্যে দিয়ে পত্রিকার সম্পাদিকা অন্তরা সিংহরায়ের দুর্গাপুর-১২ বিবেকানন্দ পার্কের বাড়ি থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি। ‘রবীন্দ্র মাসে রবীন্দ্রনাথ আসুক ঘরে ঘরে’ – এই থিমকে সামনে রেখে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী, স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা মিলিত হয়ে মেতে ওঠে রবীন্দ্র চর্চায় যার হাত ধরে উঠে আসে সহজপাঠ থেকে সঞ্চয়িতা, কবির বাণী ইত্যাদি।
বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী বর্ণালি সরকারের দুর্গাপুরের বাড়িতে আয়োজিত প্রভাতী রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠান এলাকার মানুষের প্রশংসা আদায় করে নেয়। এইভাবে দুর্গাপুরের একাধিক এলাকায় কবির লেখা গান ও কবিতার মধ্য দিয়ে কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
প্রতিটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকা গোষ্ঠীর সভাপতি অশোক সিংহরায়, তরুণ সাহা, জয়া মোদক, উমাশংকর সেন , রীনা রায়, অর্চনা সিংহরায়, অঙ্কিত ঘোষ, শুভ্রা পাল এবং সবার মধ্যমণি অন্তরা সিংহরায় সহ অসংখ্য রবীন্দ্র অনুরাগী।
পত্রিকার সম্পাদিকা অন্তরা সিংহরায় বললেন – আমাদের লক্ষ্য ‘ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ’ কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনা বৃদ্ধি করা। ওদের মধ্যে সুষ্ঠু ও সংস্কৃতি ভাবনা গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের। রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দরকার হয়না বিশাল সুসজ্জিত মঞ্চ বা আধুনিক সাউণ্ড সিস্টেম।দরকার একটু আন্তরিকতা, কবির প্রতি শ্রদ্ধা। এভাবেই হয়তো বাংলা কাব্য জগত তার অতীত গৌরব ফিরে পাবে।