eaibanglai
Homeএই বাংলায়রাজু ঝা হত্যাঃ বিচারপতি মান্থা কি সিবিআই তদন্তের ইঙ্গিত দিলেন?

রাজু ঝা হত্যাঃ বিচারপতি মান্থা কি সিবিআই তদন্তের ইঙ্গিত দিলেন?

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ– রাজু ঝা হত্যা মামলা এবার কি সত্যিই চলে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এর হাতে? কলকাতা হাইকোর্টের গতি প্রকৃতি অন্তত সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

দুদিন আগে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা সরাসরি কেন্দ্রের নিযুক্ত অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের কাছে স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছেন – নিহত রাজু ঝা সিবিআই অথবা ইডির দায়ের করা কোনো মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন, নাকি তিনি সাক্ষী ছিলেন? বিচারপতি মান্থা তার নির্দেশে ১৬ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিনই বিষয়টি জেনে আদালতকে জ্ঞাত করার জন্য কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসটার জেনারেল অশোক চক্রবর্তীকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেদিনই সিবিআই ও ইডির কাছ থেকে বিষয়টি জেনে আদালতে বক্তব্য পেশ করতে হবে অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলকে, বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা হত্যা নিয়ে দায়ের করা নিহতের একসময়ের সহযোগী নরেন্দ্রনাথ খাড়কার মামলার শুনানি হয়। আগের দিনের শুনানিতে রাজু, খাড়কা এবং আব্দুল লতিফ সিবিআইয়ের মামলায় অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। সেই কারণে রাজু খুনের মামলার বিষয়ে সিবিআইয়ের স্পষ্ট বক্তব্য জানতে চান বিচারপতি। সিবিআই মামলার তদন্তভার হাতে নিতে ইচ্ছুক কিনা তা অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলের কাছে এটিও পরিস্কার করে জানতে চান বিচারপতি মান্থা। বিচারপতির এই পর্যবেক্ষণের পর মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যেতে পারে বলে চর্চা শুরু হয় হাইকোর্ট এবং পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের আইনজীবী মহলে। এদিন, রাজু সিবিআই অথবা ইডির কোনো মামলায় অভিযুক্ত নাকি সাক্ষী ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তা নিরসনে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে বিষয়টি জেনে আদালতকে অবহিত করতে বলা হয় অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলকে। গত ১ এপ্রিল বর্ধমানের শক্তিগড়ে রাজু হত্যাকাণ্ডের পরপরই কৌশলে বাতাসে ভাসিয়ে দেওয়া হয় যে রাজু ওদিন গোরু পাচার এবং কয়লা পাচারের বহু নথি দুটি বড় ব্যাগে ভরে আব্দুল লতিফকে সঙ্গে করে আসলে দিল্লির পথে রওনা দিয়েছিলেন। শেখ আব্দুল লতিফ ততদিন গোরু পাচার মামলার ফেরার আসামি ছিলেন। গত ২৭ এপ্রিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজিরার পর বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী প্রথমে ৪ মে অব্দি তার শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেন। গতকাল সিবিআই এর আইনজীবী পরপর তিনদিন জেরার সুযোগই যথেষ্ট বলার পর আব্দুল লতিফের জামিনের মেয়াদ আরো বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে, ঝা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নিযুক্ত বর্ধমান পুলিসেরি সিটের বিরুদ্ধে ঘটনায় ধৃত অভিজিৎ মণ্ডলের উপর পুলিসি হেফাজতে থাকাকালীন নির্যাতন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ধৃতের উপর চাপ সৃষ্টি করে ঘটনায় নারায়ন খড়কার জড়িত থাকার কথা বলানোর চেষ্টা করা হয় বলে হাইকোের্ট অভিযোগ করা হয়েছে। সিট এখনও পর্যন্ত শার্প শ্যুটারদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে সিটের তদন্ত। এমনকি, সিটের কোনো কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছে করে’ তদন্তের মোড় ঘোরানোর অভিযোগও উঠেছে।

রাজুকে খুনের পিছনে প্রভাবশালীদের যোগ রয়েছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ করে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে কয়লা পাচার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য তুলে দেওয়া আটকাতেই পরিকল্পিতভাবে রাজুকে খুন করা হয় বলে সোচ্চার হয় বিরোধীরা। স্বাভাবিকভাবেই সিট তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা সামনে আসবে না বলে অভিযোগ ওঠে। এরই মধ্যে অভিজিৎকে দিয়ে নরেন্দ্রনাথ খাড়কার নাম বলানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তাতে অন্য মাত্রা দেয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments